রাজধানীর পল্লবীতে কাছাকাছি দূরত্বে আওয়ামী ও বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার পর পল্লবী ৬ নম্বর মুসলিম বাজার এলাকায় ওই সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম জানান।
সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশকে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়তে দেখা যায়। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
জ্বালানি তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে পল্লবী ৬ নম্বর বাজারের পশ্চিমপাশে মুকুল ফৌজ মাঠে সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি।
অন্যদিকে সদ্য প্রয়াত নেতা সাজেদা চৌধুরীর স্মরণে পল্লবী ১২ নম্বর সেকশনের ডি ব্লকের ঈদগাহ মাঠে শোক সভার আয়োজন করেছিল আওয়ামী লীগ।
ওসি পারভেজ বলেন, দুই দলের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যেতে থাকলে উত্তেজনা শুরু হয়।
“৬ নম্বর মুসলিম বাজারের কাছ দিয়ে দুই পক্ষের মিছিল যাওয়ার সময় বিএনপির মিছিল থেকে আওয়ামী লীগের মিছিলে ঢিল নিক্ষেপ করে কেউ। এতে উত্তেজনা বাড়ে এবং দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।”
পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ সক্রিয় হলে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এসময় যান চলাচল বিঘ্নিত হয় ও দোকানপাটও বন্ধ হয়ে যায়।
পল্লবী থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) উদয় কুমার মণ্ডল জানান, আওয়ামী লীগের সভাটি বেলা আড়াইটার দিকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টার দিকে শেষ হয়। অন্যদিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর বিএনপির সমাবেশ আর হয়নি।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা পুলিশের অনুমতি নিয়ে সেখানে সমাবেশ করতে নেতা-কর্মীদের আসতে বলেছি। নেতা-কর্মীরা যখন মিছিল নিয়ে আসছিল, তখনই আওয়ামী লীগ, যুব লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর লাঠি-সোঁঠা নিয়ে হামলা চালায়, পুলিশ টিয়ার গ্যাস মেরেছে।
“দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদের আমাদের এই কর্মসূচি চলছে রাজধানীর বিভিন্ন থানায়। সেখানে এই হামলার ঘটনা প্রমাণ করে, তারা ফ্যাসিস্ট কায়দায় আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে রুখে দিতে চায়।”
অন্যদিকে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আওয়ামী লীগের থানা কমিটির পূর্ব নির্ধারিত একটি সমাবেশ ছিল। কিন্তু একই জায়গায় বিএনপিও সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। পরে বিএনপি জায়গা পরিবর্তন করলেও দূরত্ব কাছাকাছি ছিল।”
কাছাকাছি উভয় দলের কর্মসূচি থাকায় সব ধরনের ঝামেলা এড়ানোর ‘নির্দেশনা’ ছিল মন্তব্য করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “কিছু অতি উৎসাহী মানুষ এসব ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে।”
পল্লবী থানার ওসি পারভেজ বলেন, “পরিস্থিতি এখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। বিএনপির কোনো সমাবেশ হচ্ছে না। তারা চলে গেছে।”