“একটি দামি বাইকে হেলমেট পরা একজন টিএসসির সামনে আমার ছেলে ও ভাতিজাকে আটকায়। আমার ধারণা, মেলা থেকেই তাদের অনুসরণ করছিল। আইফোন দুটি নিয়ে যায়”, বলেন কবি শিহাব শাহরিয়ার।
Published : 25 Feb 2024, 09:51 PM
অমর একুশে বইমেলা ঘিরে মোবাইল চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ‘বেড়েছে’ বলে জানাচ্ছেন লেখক, প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা।
তারা বলছেন, মেলায় প্রায় প্রতিদিনই মোবাইল ফোন চুরি হচ্ছে। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে চুরি-ছিনতাই বেশি হচ্ছে।
তবে এসব ঘটনায় কতগুলো অভিযোগ জমা পড়েছে কিংবা জিডি হয়েছে, সেই তথ্য দিতে পারেননি মেলার নিরাপত্তায় নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ ও শাহবাগ থানা পুলিশ।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কবি শিহাব শাহরিয়ারের ছেলে ও ভাতিজার কাছ থেকে দুটি আইফোন ছিনতাই করে একটি চক্র।
শিহাব শাহরিয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একটি দামি বাইকে করে এসে হেলমেট পড়া একজন টিএসসির সামনে আমার ছেলে ও ভাতিজাকে আটকায়। আমার ধারণা, মেলা থেকেই তাদের অনুসরণ করছিল এবং পরে কোনো কেমিকেল ব্যবহার করে। তাদের দুটি আইফোন নিয়ে যায়।”
এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন শিহাব শাহরিয়ার। ঘটনাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং র্যাব ও পিবিআইকেও জানানোর কথা জানান তিনি।
এখন পর্যন্ত মোবাইল ফোন দুটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে শিহাব শাহরিয়ার বলেন, “পুলিশ আমাকে জানিয়েছে, আইফোন যদি খোলা হয়, তবে তারা শনাক্ত করতে পারবে।”
কবি শাহেদ কায়েস তার মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে জানিয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় জিডি করেন। জিডিতে তিনি মেলা থেকে ফোনটি হারিয়ে যাওয়ার কথা লিখেন।
বইমেলা থেকে বৈভব প্রকাশনীর প্রকাশক পাপিয়া জেরীন এবং তাদের এক বিক্রয়কর্মীর মোবাইল ফোনও চুরি হয়েছে বলে জানান শাহেদ কায়েস।
বইমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ‘নাজুক’ মন্তব্য করে শাহেদ কায়েস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেলায় প্রতিদিনই মোবাইল ফোন চুরি হচ্ছে, বিশেষ করে যেদিন প্রচুর দর্শক সমাগম হয় মেলায়। শুক্র-শনিবারে চুরির ঘটনা বেশি ঘটছে।”
তার ভাষ্য, “বইমেলার ভেতরে উদ্যানের দিকে এবং বাইরে টিএসসি গেট ও আশেপাশে ছিনতাইকারী তৎপর। ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনের দিকে বই মেলায় ঢুকতে যে গেইট রয়েছে, সেখানে বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।”
চুরির ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমার কাছে তো এরকম কোনো অভিযোগ আসেনি। আমাদের যদি জানানো হয়, তবে আমরা মেলার নিরাপত্তার দায়িত্বে প্রশাসনের যারা আছেন, তাদেরকে জানাব।”
মেলা ঘিরে ফেব্রুয়ারি মাসে শাহবাগ থানায় কতগুলো মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ এসেছে, তা জানাতে পারেননি থানার ডিউটি অফিসার এসআই তুলসি সেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “প্রতিদিনই বিভিন্ন কারণে জিডি হচ্ছে। তবে ফোন চুরি বা ছিনতাই হয়েছে, এইরকম অভিযোগে কতটা জিডি হয়েছে তা আলাদাভাবে হিসেব করা হয়নি।”
অপরদিকে মেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ‘যথেষ্ট ভালো’ দাবি করে শাহবাগ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “এত সুন্দর সিকিউরিটি থাকার পরও যাদের ফোন চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন, তাদেরকেও একটু সতর্ক থাকতে হবে।
“আমরা সতর্ক রয়েছি, যেহেতু অভিযোগ এসেছে। আমরা নিরাপত্তা বিষয়ে আরো সতর্ক হব।”