প্রত্যক্ষদর্শীর কাছ থেকে মা জানতে পেরেছেন, ফ্লাইওভারে কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তির পর একটি ছেলে মিমকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।
Published : 10 Oct 2023, 08:53 PM
রাজধানীর মালিবাগে ফ্লাইওভার থেকে পড়ে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় ‘অনেক কিছু্ই পরিষ্কার না’ পুলিশের কাছে। তবে সেই নারী ঘটনার আগের রাতে ‘এক বন্ধুর ফোন পেয়ে’ বাসা থেকে বের হয়েছেন তথ্য পেয়ে সেই যুবকের খোঁজে তারা।
সেই যুবকের নাম পাওয়া গেছে জানিয়ে রমনা থানার ওসি আবুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
সোমবার রাতে সাহিদা ইসলাম মিম নামে ৩১ বছর বয়সী সেই নারীর মরদেহ খুঁজে পায় পুলিশ।
এই ঘটনায় তার মা নাজমা আক্তার আজিমন মঙ্গলবার রমনা থানায় যে মামলা করেছেন, যাতে সুনির্দিষ্ট কাউকে আসামি করা হয়নি। তবে ঘটনাটি ‘হত্যা’ বলে দাবি করেছেন তিনি।
এজাহারে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মিম তার এক বন্ধুর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন। রাত নয়টার দিকে সেই বন্ধুর মোটর সাইকেলে করেই কফি খেতে হাতিরঝিল থানার ওমর আলী লেনের বাসা থেকে বের হন।
যে ছেলে বাসা থেকে মিমকে ডেকে নিয়ে গেছেন, তার পরিচয় তিনি জানেন বলেও মামলায় উল্লেখ করেন নাজমা।
পুলিশ জানিয়েছে, মিম এসএসসি পাস করার পর আর লেখাপড়া করেননি। তিনি বিভিন্ন জায়গায় নাচ ও গান করতেন।
‘প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে’ হত্যার অভিযোগ
মামলায় আজিমন উল্লেখ করেন, ঘটনার রাতে সাড়ে ১২টার দিকে মিম ফোনে তাকে জানান, তিনি ফারস হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে রয়েছেন। একটু পরেই বাসায় ফিরবেন।
বাসায় না ফিরলে রাত ১টার দিকে কল করলে ফোন বাজলেও তা ধরেননি মিম। কিছুক্ষণ পর একজন ফোন ধরে নিজেকে রমনা থানার পুলিশ পরিচয় দিয়ে ফ্লাইওভারের নিচে যেতে বলেন।
মায়ের অভিযোগ, আশেপাশের লোকজনের মাধ্যমে তিনি জানতে পেরেছেন, যেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, সেই এলাকায় ফ্লাইওভারে মিমের সঙ্গে একটি ছেলের কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তি হয়। তখন সেই ছেলেটিই মিমকে উপর থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে চলে যায়।
‘হত্যার হুমকি ছিল’
মামলায় বলা হয়, গাজীপুরের টঙ্গীর পিন্টু নামে এক ব্যক্তি মিমকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। মিম রাজি না হওয়ায় এক মাস আগে তাকে টঙ্গী স্টেশন রোডে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়।
মা লেখেন, “মিমের মোবাইলে সব সময় বিরক্ত করত ও ফোন করত। মিম তাকে কল ও এসএমএস দিতে নিষেধ করলে সে মিমকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল।”
কী বলছেন ওসি
মিমের মৃত্যুর কারণ বিষয়ে রমনা থানার ওসি আবুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও আরো কিছু পরীক্ষার ফলাফলের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
সেই নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নিচে পড়ে যাওয়া পুরো শরীর থেঁতলানো। তাই বাহ্যিকভাবে কিছু বোঝা যাচ্ছে না।
“অনেক কিছু্ই পরিষ্কার নয়, তবে পরিবারের অভিযোগ রয়েছে, তাই হত্যা মামলা নথিভূক্ত করা হয়েছে।”
“যে যুবকের সঙ্গে মিম বের হয়েছেন তাকে গ্রেপ্তার করতে পারলে অনেক কিছু পাওয়া যাবে”, বলেন ওসি আবুল হাসান।