ক্রিকেটার স্বর্ণার ফোন চুরি: আযানসহ দুজন রিমান্ডে

ক্রিকেটার নুঝহাত তানিয়ার স্বামী মো. আল-আমিন দেওয়ান আযানকে তিন দিন এবং চুরি করা মোবাইরের ক্রেতা আব্দুর রহিম মিলনকে এক দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2024, 02:19 PM
Updated : 1 Feb 2024, 02:19 PM

বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার স্বর্ণা আক্তারের বাসায় চুরির মামলায় গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।

তাদের মধ্যে স্বর্ণার রুমমেট ক্রিকেটার নুঝহাত তানিয়ার স্বামী মো. আল-আমিন দেওয়ান আযানকে তিন দিন এবং চুরি করা মোবাইরের ক্রেতা আব্দুর রহিম মিলনকে এক দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

শেরেবাংলা থানার এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পুলিশ পরিদর্শক মশিউল আলম ভূঁইয়া বৃহস্পতিবার আসামিদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।

মিলনের পক্ষে তার আইনজীবী নুরুল ইসলাম দিদার রিমান্ডের বিরোধিতা করে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, “আসামি আযান তার বোনের মোবাইল বলে মিলনের কাছে বিক্রি করে। ছবিও দেখায় সে। মিলন সরল বিশ্বাসে মোবাইলটি কেনে।”

আযানের পক্ষে এদিন কোনো আইনজীবী ছিলেন না। বিচারক তাকে প্রশ্ন করলে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আযান বলেন “সাড়ে ৩ হাজার ডলার নয়, ৭০০ ডলার ভাঙিয়েছি। ওরা (বাদী) তা জানে।”

শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম আরফাতুল রাকিব রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন শাখার এসআই জালাল উদ্দিন জানান।

স্বর্ণা আক্তার, নুঝহাত তানিয়াসহ চার নারী ক্রিকেটার গত প্রায় তিন বছর ধরে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করে আসছেন। তাদের মধ্যে তানিয়ার সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে আযানের প্রেম হয় এবং গত ১২ জানুয়ারি তারা বিয়ে করেন।

বিয়ের পর পূর্ব রাজাবাজার সেই ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে থাকতে শুরু করেন তানিয়া ও আযান। স্বর্ণা এবং অন্য দুই ক্রিকেটারের কাছ থেকে ফেরত দেওয়ার কথা বলে প্রায় ২ লাখ টাকাও নেন আযান।

গত সোমবার স্বর্ণা তার দুটি আইফোন, সাড়ে ৩ হাজার ডলার, নগদ টাকাসহ প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকার মালামাল চুরির অভিযোগে রাজধানীর শেরে বাংলানগর থানায় মামলা করেন। সেখানে আযানকে আসামি করা হয়।

ওই মামলার ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে দিনাজপুর থেকে আল-আমিন দেওয়ান আযানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

আর আযান একটি আইফোন যার কাছে ১১ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন, সেই আব্দুর রহিম মিলনকেও ঢাকার মুগদা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাব বলছে, আযান সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন আইডি খুলে নিজেকে বড় ব্যবসায়ী পরিচয় দিতেন। ছবির পাশাপাশি টিকটক ভিডিও আপলোড করতেন। কিছু নারীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে বিয়ের কথা নগদ অর্থসহ মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যেতেন।

২০২২ সালে আযান প্রথম বিয়ে করেন। পরে তার সঙ্গে একাধিক নারীর সম্পর্ক এবং প্রতারণার বিষয় প্রকাশ পেলে বিচ্ছেদ হয় বলে জানায় র‌্যাব।

ফেইসবুকে নতুন আইডি খুলে নিজেকে গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে ক্রিকেটার তানিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তিনি, দ্রুতই বিয়ে করে নেন।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কামান্ডার আল মঈন বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ২০১১ সালে রাজধানীর একটি স্কুল থেকে এসএসসি পাস করা আযান রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে কাপড়ের দোকানে চাকরি করতেন। তার বিরুদ্ধে ঢাকা এবং চাঁদপুরে চারটি মামলা রয়েছে। তিন বার কারাভোগও করেছেন।

নারীদের সঙ্গে প্রতারণা প্রকাশ পেলে বা এমন আশঙ্কা করলে আযান ভারতে চলে যেতেন। স্বর্ণার মোবাইল, ডলার চুরির পরও অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার জন্য তিনি দিনাজপুরে গিয়েছিলেন।

তার কাছ থেকে ৪টি আইফোন, একটি অন্য ব্র্যান্ডের ফোন, প্রাইম ব্যাংকের চেক বইয়ের পাতা, প্রাইম ব্যাংকের মাস্টার কার্ড, বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রা, তিনটি হাত ঘড়িসহ অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করার কথা বলেছে র‌্যাব।