আসামির আইনজীবী বলেন, “রায় ঘোষণার সময়ও তিনি আদালতে ছিলেন। রায় ঘোষণার পর পিছনে তাকিয়ে দেখি তিনি নেই।”
Published : 19 Mar 2024, 05:39 PM
হল-মার্ক কেলেঙ্কারির মামলায় সাজার রায় শুনে আদালত থেকে পালিয়ে গেছেন দণ্ডিত এক আসামি।
মো. জামাল উদ্দিন সরকার নামের ওই ব্যক্তি সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় দুই ধারায় তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং সাত লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে রায়ে।
ঢাকার প্রথম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আবুল কাশেম মঙ্গলবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আত্মসাতের দায়ে হল-মার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তানভীর মাহমুদ এবং তার স্ত্রী ও কোম্পানির চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামসহ নয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় রায়ে। এছাড়া আবুল কাশেমসহ আটজনকে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড।
জামিনে থাকা আসামি মো. জামাল উদ্দিন সরকার এদিন রায় শুনতে আদালতে হাজির হন। ওকালতনামায় স্বাক্ষরও করেন। কিন্তু সাজার রায় শোনার পরে কোনো এক ফাঁকে তিনি আদালত থেকে বেরিয়ে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামাল উদ্দিনের আইনজীবী হারুন অর রশিদ বলেন, “রায় ঘোষণার সময়ও তিনি আদালতে ছিলেন। রায় ঘোষণার পর পিছনে তাকিয়ে দেখি তিনি নেই।”
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাজীব ঘোষ বলেন, “রায় ঘোষণা শেষে আসামিকে খুঁজতে গিয়ে দেখি, তিনি নেই।”
পরে আদালত জামাল উদ্দিনের জামিন বাতিল করে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অস্তিত্বহীন ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের নামে প্রায় ৫২৬ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলা করে দুদক।
তদন্ত শেষে দুদক অভিযোগপত্র দিলে ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।
মঙ্গলবার ২৪৮ পৃষ্ঠার রায়ের পর্যবেক্ষেণে বিচারক বলেন, “মামলাটির ঘটনা ব্যাংকিং ইতিহাসে এক বিস্ময়কর ঘটনা। যে অপরাধীরা দেশের জনগণের আমানত, দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা, দেশের অর্থনীতিকে খেলো মনে করে, তাদের মৃত্যুদণ্ডের মত সাজা হওয়া উচিত মর্মে আদালত মনে করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট আইনে সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন। এমতাবস্থায় অপরাধের সঙ্গে সরাসরি জড়িতদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হল।”