কেবল প্রকল্প করার জন্য প্রকল্প নয়, গুরুত্ব বুঝে কাজ: প্রধানমন্ত্রী

পরিবেশের দূষণ ঠেকাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম গ্রাম পর্যায় থেকে শুরু করার তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Feb 2024, 09:29 AM
Updated : 25 Feb 2024, 09:29 AM

সরাকারি কোনো প্রকল্প নেওয়ার আগে এর প্রয়োজনীয়তা কতখানি সে বিষয়ে খতিয়ে দেখতে জনপ্রতিনিধিদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর পাশপাশি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কারোর জমি নিয়ে নেওয়া অথবা প্রভাবশালী কোনো ব্যক্তির বাড়ির কাছে স্থাপনা গড়ে তোলার চর্চা থেকে সরে আসতে বলেছেন তিনি।

পরিবেশ সংরক্ষণে জোর দিয়ে সরকারপ্রধান বলেছেন, “কোন প্রকল্প নিতে গেলে দয়া করে প্রকল্প নেওয়ার জন্য নেবেন না। যথাযথ কাজে লাগবে কিনা সেটা দেখতে হবে। বর্জ্য ব্যবস্থার জন্য যথাযথ দূরত্ব দেখে প্রকল্প নিতে হবে। যাতে অন্য প্রকল্পগুলো দূষণ করতে না পারে।

“ওমুকের জমি নিতে হবে, ওমুকের বাড়ির কাছে করতে হবে, এই চিন্তা মাথা থেকে সরতে হবে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে সার্বিকভাবে চিন্তা করতে হবে। পরিবেশ সংরক্ষণের দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।”

রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস-২০২৪’ উদযাপন অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন শেখ হাসিনা।

পরিবেশের দূষণ ঠেকাতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম গ্রাম পর্যায় থেকে শুরু করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, “এখন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গ্রাম থেকে শুরু না করলে, এগুলো একটা সমস্যা হবে। শহরগুলোতে বিরাট সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে, বর্জ্যগুলো কোথায় ফেলবে, কী করবে, না করবে? সেগুলো থেকে কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়। রিসাইকেল করা যায়।”

শেখ হাসিনা বলেন, “ইতোমধ্যে রাস্তাঘাট ব্যাপক হারে করা হয়েছে। পায়ে চলা রাস্তাগুলোকে প্রথমে মাটিতে করতে হয়। তারপর ইট বিছানো, এরপর পাকা করে দেওয়া, এখনও অনেক এলাকায় বাকি আছে, আমার কিন্তু শুরু করেছি।

“স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। সরকারি কর্মচারীরা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চাকরি করে, তাদের জবাবদিহি নাই।... জনগণ সেবা পাচ্ছে কি না আমাদের দেখতে হবে; না দেখলে চলবে না। দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্ব আছে। তারাও যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।”

বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহে সরকারের ভূমিকা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, “আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয় হতে হবে, কারণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে অনেক খরচ হয়। এত বেশি খরচ হয় আমরা কিন্তু কম টাকা নিই। যারা বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তারাই লাভবান হয়। এখন থেকে আর সে ব্যবস্থা হবে না। একটা নির্দিষ্ট ইউনিট পর্যন্ত ছাড় দেওয়া আছে। যারা নিম্নবিত্ত, এর উপরে যারা বেশি ব্যবহার করবে তার বিদ্যুতের মূল্য তত বেশি বৃদ্ধি পাবে। সেভাবে আমরা করতে চাই।”

শেখ হাসিনা বলেন, “আওয়ামী লীগ যখন বিরোধী দলে ছিল তখন আমরা একটা কমিশন গঠন করি, ৯৬ সালে। যখন আমার সরকারে আছি তখনই আমরা ওয়ার্ড থেকে নিয়ে, ইউনিয়ন পর্যায়ে, উপজেলা, জেলা পর্যন্ত আমরা আইন পাস করি। জেলা পরিষদ আইন আমরা সেই সময় করে দিয়েছি। আমরা ৯২-৯৩ সালে উদ্যোগ নিয়েছিলাম, ৯৬ সালে সরকার গঠন করে আমরা এই কাজগুলো করেছি।

“২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর আবারও আমরা ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশনকে শক্তিশালী করি। জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে যেন এগুলো গড়ে ওঠে, সেই ব্যবস্থাটাই আমরা নিয়েছি। আমাদের লক্ষ্যটাই হচ্ছে দেশের সার্বিক উন্নয়ন।”  

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ধারাবাহিকতায় দেশে প্রায় ৮ হাজারের মত ডিজিটাল সেন্টারের পরিংসখ্যান তুলে ধরে মোবাইল ও ইন্টারনেট সুবিধার মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির কথাও প্রধানমন্ত্রী বলেন।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ময়ের আতিকুল ইসলাম, বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ, শরীয়তপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার, বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লায়েব উদ্দিন লাভলু, পঞ্চগড় পৌরসভা মেয়র জাকিয়া খাতুন ও জগদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন রশিদ লাভলু বক্তব্য দেন।