“চোরেরা গাড়িটা স্টার্ট করার তেলও রাইখা যায়নি; সামনের দুইটা আর পেছনের দুইটা চাকাও নিয়ে গেছে,” বলেন হানিফ বাসের এক ব্যবস্থাপক।
Published : 07 Nov 2024, 11:38 PM
ঢাকার গাবতলী থেকে ‘মাহতাব এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি বাস চুরি হয়েছে, যার খোঁজ মেলেনি তিন দিনেও।
এরইমধ্যে গাইবান্ধা থেকে হানিফ পরিবহনেরও একটি বাস চুরি হয়, যেটি পরে পাওয়া গেলেও খোয়া গেছে চারটি চাকা, ব্যাটারি আর প্রায় ১০০ লিটার ডিজেল।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছেন উভয় বাসের মালিকপক্ষ।
মাহতাব এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. মাহতাব বলছেন, তার হিনো ৮৩ মডেলের বাসটি গোপালগঞ্জ থেকে সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালে প্রবেশ করে। টার্মিনালের ‘এন্ট্রি-এক্সিট’ খাতায় দেখা যায়, বাসটি রাত ৮টার দিকে গাবতলী থেকে বের হয়ে যায়।
“চালকের বাসা সাভারে। বাসটি তিনি হেলপারকে বুঝিয়ে দিয়ে যান। অল্পবয়সী হেলপার ছেলেটির এক আত্মীয় নারায়ণগঞ্জে অসুস্থ ছিল। সেখানে যাওয়ার কথা বলে ওই বাসের সাবেক দুই কর্মীকে দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে যান।”
মাহতাবের ভাষ্য, “যে দুইজনকে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদের একজনের নাম আব্দুল্লাহ। গাবতলীর লোকজন তাকে জানিয়েছে, তারা রাতে আব্দুল্লাহকে বাসটি চালিয়ে চলে যেতে দেখেন।”
মালিকের দাবি, “বাস চুরির দুই দিন পর চালক বিষয়টি জানিয়েছেন। এ নিয়েও একটু খটকা আছে। এ বিষয়ে দারুসসালাম থানায় অভিযোগ দিয়েছি। গাবতলী ফাঁড়ির ইনচার্জ কামরুল ইসলাম তদন্ত করছেন।”
জানতে চাইলে পুলিশ সদস্য কামরুল বলেন, বাসটি টার্মিনাল থেকে বের করে নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বাসের সাবেক কর্মী এই চুরির ঘটনায় জড়িত। তাদের খোঁজা হচ্ছে।
মাহতাব এন্টারপ্রাইজের বাসটি সুবর্ণ পরিবহনের ব্যানারে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ রুটে চলাচল করে।
হানিফের বাস আছে, নেই চার চাকা, ব্যাটারি আর তেল
গাইবান্ধা বাস টার্মিনাল থেকে বুধবার রাতে চুরি হয় হানিফ পরিবহনের একটি বাস, যেটি বৃহস্পতিবার পাঁচবিবি-হিলি সড়কে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
বিষয়টি নিয়ে গাইবান্ধা থানায় অভিযোগ দিয়েছে বাস মালিকপক্ষ।
গাইবান্ধা থানার ওসি শাহিনুল ইসলাম তালুকদার বলেন, হানিফের বাস চুরি সংক্রান্ত একটি অভিযোগ থানায় দেওয়ার পর পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করে। পরে বাসটি পাওয়ার কথা জানিয়েছে তারা।
হানিফ এন্টারপ্রাইজের গাইবান্ধার ব্যবস্থাপক এসএম রাশেদ বলছেন, বাসটি পাওয়া গেলেও চারটি চাকা, ব্যাটারি ও শখানেক লিটার ডিজেল চুরি হয়ে গেছে।
ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, “বুধবার রাতে বাসটির ঢাকার ট্রিপ বাতিল করে সেটিকে সকালের ট্রিপ দেওয়া হয়। চালক বাসে হেলপারকে রেখে চলে যান। আর ওই হেলপার এনা পরিবহনের আরেকটি বাসের ডিউটি নিয়ে রাতেই ঢাকায় চলে যায়। ফলে বাসটিতে কেউ ছিল না।
“এর মধ্যে বুধবার রাত ৩টা ১০ থেকে সোয়া ৩টার মধ্যে টার্মিনাল থেকে বাসটি বের করে নেওয়া হয়। বাসটি চালিয়ে পাঁচবিবি-হিলি সড়কে নেওয়া হয়। এরপর সালাইপুর বাজার পার হয়ে নির্জন জায়গায় রাস্তার পাশ ঘেঁষে পার্ক করে চোরেরা।”
রাশেদের ভাষ্য, স্থানীয় লোকজন ভেবেছিল, বাসটি কেউ রিজার্ভ করে নিয়ে এসেছে। তারা চাকা ও ব্যাটারি খুলতেও দেখেছিলেন। তারা ভেবেছিলেন হয়ত সেটার মেরামতি কাজ চলছে। এরপর তারা পিক আপ ট্রাক বা ভ্যানে করে সেগুলো নিয়ে বাসটি ফেলে চলে যায়।
ফেইসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে বাস চুরির খবরের পর বাসটির সন্ধান পাওয়ার কথা বলেন তিনি।
“সন্ধ্যায় গিয়ে বাসটি উদ্ধার করি। চোরেরা গাড়িটা স্টার্ট করার তেলও রাইখা যায়নি।”