পাহাড়ের গুহায় মিলল ৮ শিবির কর্মী

চট্টগ্রামে ইসলামী ছাত্র শিবিরের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত মহসিন কলেজ ক্যাম্পাসের একটি পাহাড়ের গুহা থেকে আট শিবির কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

উত্তম সেনগুপ্ত, চট্টগ্রাম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2015, 04:30 AM
Updated : 18 March 2015, 08:26 AM

পাশাপাশি কলেজ ক্যাম্পাসে বিএনসিসিসহ ও যুব রেডক্রিসেন্টের কার্যালয় এবং পাহাড়ি এলাকা থেকে হাতবোমা তৈরির বিস্ফোরক দ্রব্য ও সরঞ্জাম এবং ধারাল অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার বেলা ১২টার দিকেও কলেজ ক্যাম্পাসের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে অভিযান চলছিল।

অবরোধে নাশকতায় জড়িতদের ধরতে ভোররাতে চট্টগ্রাম কলেজে অভিযান চালানোর পর সকালে মহসিন কলেজে যায় পুলিশ।

কলেজের মহসিন মুসলিম ছাত্রাবাসে তল্লাশি চালিয়ে কাউকে পাওয়া না গেলেও পাশের একটি পাহাড়ে প্রায় একশ ফুট গভীর গুহা থেকে আট জনকে আটক করা হয় বলে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার তানভীর আরাফাত জানান।

এদের মধ্যে সাতজন ওই কলেজের এবং একজন অন্য একটি কলেজের ছাত্র। তারা সবাই ইসলামী ছাত্র শিবিরের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ কর্মকর্তা আরাফাত জানান।  

আটকরা হলেন- নাজমুল সাকিব, জসিম উদ্দিন, নাসির উদ্দিন, মীর শাহরিয়ার শাহাদাৎ, মো. ইসমাইল, মো. শামসুদ্দিন, মো. সারওয়ার ও মো. ফরহাদ।

এদের মধ্যে ফরহাদ শহরের হাজেরাতোজু ডিগ্রি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম বর্ষের ছাত্র। অন্যরা মহসিন কলেজের স্নাতক ও উচ্চ মাধ্যমিকের বিভিন্ন বর্ষের ছাত্র।

থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের এই যৌথ অভিযানে তল্লাশি চালানো হয় মহসিন কলেজের পুরনো কেন্টিনে, যেখানে বর্তমানে যুব রেডক্রিসেন্ট ও বিএনসিসি নৌ শাথার কার্যালয় রয়েছে। সেখানকার কক্ষে কয়েকজন ছাত্রও থাকে।

যুব রেডক্রিসেন্টের কার্যালয়ে পেরেক, বিয়ারিংসহ হাতবোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া যায়।

আর বিএনসিসির কার্যালয়ের সামনের একটি নালায় চটের বস্তার ভিতরে কয়েকটি কিরিচ, বিস্ফোরক দ্রব্য ও পেট্রোল পাওয়া যায়।

মহসিন কলেজের পেছনের অংশের পাহাড়ি এলাকা থেকেও হাতবোমা তৈরির বিভিন্ন উপকরণ, গ্লাভস ও হেলমেট উদ্ধার করে পুলিশ।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (বন্দর) ও বোমা নিস্ক্রীয়কারী ইউনিটের সদস্য আনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পাহাড়ি এলাকায় যেসব উপকরণ পাওয়া গেছে তাতে নিশ্চিত এখানে ককটেল বানানো হতো। বোমা তৈরির সময় নিরাপত্তার জন্য তারা গ্লাভস ও হেলমেট ব্যবহার করতো।”

মহসিন কলেজে অভিযান চলার মধ্যেই পাশেই নগরীর জামালখানে জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে যায় পুলিশের একটি দল।

ভিতর থেকে তালাবন্ধ ওই কার্যালয়ে অনেকক্ষণ কড়া নাড়ার পর কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ঢোকে পুলিশ।

কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে একটি টেবিলের নিচে লুকিয়ে থাকা সংগঠনের বায়তুল মাল সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদকে (৬০) আটক করেন পুলিশ সদস্যরা।

অভিযানের নেতৃত্বে থাকা পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার দীপক জ্যোতি খীশা জানান, ওই কার্যালয় থেকে জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র, যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর কয়েকটি বইসহ বিভিন্ন কাগজপত্র পাওয়া গেছে।

এর আগে ভোররাতে শিবিরের শক্ত ঘাঁটি চট্টগ্রাম কলেজের দুটি ছাত্রাবাসে অভিযানে ৭২ শিবির কর্মীকে আটক করা হয়।

সেখানে ছাত্রাবাসের পাশে একটি গর্তের ভিতর থেকে শিবিরের একটি ব্যানারে মোড়ানো অবস্থায় রাইফেল, বন্দুক ও পিস্তলসহ নয়টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।