যুদ্ধাপরাধী সংগঠনের বিচারে আইন ‘আগামী অধিবেশনে’

জামায়াতে ইসলামীসহ মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত সংগঠনের বিচারের জন্য আইনের সংশোধনী জাতীয় সংসদের আগামী অধিবেশনে পাস হবে বলে আশা দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Dec 2014, 03:46 PM
Updated : 7 Dec 2014, 03:46 PM

রোববার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকরা জামায়াতের বিচারের অগ্রগতি জানতে চাইলে এই সম্ভাবনার কথা জানান তিনি।

আনিসুল বলেন, “আমি আশা করি, সংসদের আগামী অধিবেশনে আইনটি পাস করানো সম্ভব হবে। এর আগে ডিসেম্বরের শেষ দিকে বা জানুয়ারির প্রথম দিকে আইনটি মন্ত্রিসভায় উঠতে পারে।”

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা ও ধর্ষণের মতো অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন সাজার আদেশ দেওয়ার পর যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শাহবাগে গড়ে উঠা আন্দোলনের সাত দফা দাবির মধ্যে জামায়াতসহ যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দলগুলোর রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়টিও ছিল।

ট্রাইব্যুনালের আইনে প্রসিকিউশনের আপিলের সুযোগ না থাকায় ওই আন্দোলনে আইন সংশোধনের দাবি ওঠে। একইসঙ্গে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দলের বিচারের জন্য আইন সংশোধনের দাবিও তোলা হয়।

কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে দেওয়া ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর্যবেক্ষণেও একাত্তরে দল হিসাবে যুদ্ধাপরাধে জামায়াতের সম্পৃক্ততার বিষয়গুলো উঠে আসে।

ফাইল ছবি

এই রায়ের পর ১৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে রায়ের বিরুদ্ধে আসামির পাশাপাশি সরকারেরও আপিলের সমান সুযোগ এবং ব্যক্তির পাশাপাশি দল বা সংগঠনের বিচারের সুযোগ রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের বিল পাস হয়।

যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের বিচারের পরবর্তী রায়গুলোতেও দলটির যুদ্ধাপরাধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার কথা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে। ইতিমধ্যে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে জামায়াতের বিরুদ্ধে পাঁচ মাসের তদন্তও শেষ করেছে প্রসিকিউশন।

কিন্তু এর মধ্যে কোনো দল বা সংগঠন যুদ্ধাপরাধী সাব্যস্ত হলে তার শাস্তি কী হবে তা আইনে না থাকার বিষয়টি উঠে এলে সাজা নির্দিষ্ট করতে আবার আইন সংশোধনের কথা ওঠে।

আইনের ওই সংশোধনীই সংসদের আগামী আগামী অধিবেশনে তোলার কথা বলেছেন আইনমন্ত্রী।

সকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল আরবিট্রেশন সেন্টার’ আয়োজিত এক প্রশিক্ষণে অংশ নেন আইনমন্ত্রী। এতে আইনজীবী, আইনের শিক্ষক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আইন বিভাগে কর্মরত ৩৬ জন ডেলিগেট অংশ নেয়।

অনুষ্ঠানে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণ আইনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আইন তৈরির জন্য কাজ চলছে। শিগগিরই বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনসহ দেশের সব আইনজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হবে।

“তবে যাদের মতামত নিলে বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাদের মতামত নেওয়া হবে না।”