তিস্তা-সীমান্ত চুক্তি নিয়ে ‘জোর’ চেষ্টায় মোদী

তিস্তা চুক্তি সই এবং স্থল সীমান্ত চুক্তি কার্যকরে জোর প্রচেষ্টা চালানোর কথা শেখ হাসিনাকে বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

সুমন মাহবুব কাঠমান্ডু থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2014, 10:48 AM
Updated : 26 Nov 2014, 07:24 PM

অষ্টাদশ সার্ক শীর্ষ সম্মেলন উদ্বোধনের পর বুধবার কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের ঝুলে থাকা এই দুটি বিষয় নিয়ে নিজের প্রচেষ্টার কথা জানান মোদী।

বিকালে ক্রাউন প্লাজা কাঠমান্ডু- সোয়ালটিতে দুই সরকার প্রধানের বৈঠকের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের একথা জানান।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি আটকে আছে তিন বছর ধরে। এক সময় ভালো থাকলেও এখন মমতার সঙ্গে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন মোদীর দল বিজেপির সম্পর্কের বেশ অবনতি ঘটেছে।

কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকার সময় ভারতের পার্লামেন্টে স্থল সীমান্ত চুক্তি কার্যকরে প্রস্তাব তোলা হলেও তখনকার বিরোধী দল বিজেপি এর বিরোধিতা করেছিল, তবে ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিজেপির সুর নরম হয়েছে।

গত সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকেও মোদী এই দুটি বিষয় বাস্তবায়নে তার আন্তরিকতার কথা জানিয়েছিলেন।

নিজেদের দ্বিতীয় বৈঠকে শেখ হাসিনা তিস্তা চুক্তি সই এবং স্থলসীমা চুক্তি কার্যকরের বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চান ভারতের সরকার প্রধানের কাছে।  

শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “মোদী সাহেব বলেছেন, দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এটা তাড়াতাড়ি সমাধানের জন্য তিনি জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।”

বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি কার্যকরে ভারতের সংবিধান সংশোধন করতে হবে। সেই প্রস্তাব রাজ্যসভার পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটিতে অনুমোদিত হয়েছে বলে জি নিউজ জানিয়েছে। 

বাংলাদেশের দিক থেকে কোনো সমস্যা না থাকলেও ভারতের অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্যের কারণে দুটি বিষয় ঝুলে আছে।

“এই বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে উঠছে এবং হবে বলে উনি (নরেন্দ্র মোদী) আশাবাদী,” বলেন পররাষ্ট্র সচিব।

দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাস দমনে উভয় নেতা একযোগে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন,

সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সার্ক নেতারা

“দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো যার যার সামর্থ্য একত্রিত করে এই অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য দুই দেশের সরকার একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে মতৈক্য হয়েছে।”

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বোমা বিস্ফোরণের পর সে দেশের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ সফরের কথাও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট উদ্বোধনের জন্য বাংলাদেশ থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলকে সেখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে তার আগ্রহের কথা পুনরায় ব্যক্ত করেছেন বলেও জানান মাহমুদ আলী।

মোদীর সঙ্গে আলোচনার পর একই স্থানে নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালা, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।