তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছিলেন।
কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না- সোমবার তা জানতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, তাও স্পষ্ট করেননি।
রোববার জনপ্রশাসনের শীর্ষ স্তরের এই পাঁচ কর্মকর্তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ জাল বলে বাতিল হওয়ার পর সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আকবর আলি খান এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিক-উল হক দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছিলেন।
এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রতারণার অভিযোগে ফৌজদারি মামলা হতে পারে বলেও মত জানান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি।
এই পাঁচ কর্মকর্তা হলেন স্বাস্থ্য সচিব নিয়াজ উদ্দিন মিয়া, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সচিব এ কে এম আমির হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব মোল্লা ওয়াহিদুজ্জামান (বর্তমানে প্রতিমন্ত্রী মর্যাদায় বেসরকারিকরণ কমিশনের চেয়ারম্যান), মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী (বর্তমানে ওএসডি) এবং একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (ওএসডি) আবুল কাসেম তালুকদার।
সরকারের এই শীর্ষ কর্মকর্তারা কর্মজীবনের শেষ সময়ে এসে চাকরির মেয়াদ এক বছর বাড়াতে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নেন বলে অভিযোগ। মাসুদ সিদ্দিকী মুক্তিযোদ্ধার সনদ নেওয়ার সময় ওই মন্ত্রণালয়েরই সচিবের দায়িত্বে ছিলেন।
রোববার তাদের সনদ ও গেজেট বাতিল করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেছিলেন, “নিয়মানুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এখন এই পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।”
সোমবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এই পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।
সনদ বাতিল হওয়ার পরেও কেন এদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “তাদের সনদ বাতিল হয়েছে মাত্র, এখন এদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি, হবে না, সেটাও বিবেচনার বিষয়।”
এই পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের সুপারিশ থাকলেও এখনো ‘বলার মতো কিছু হয়নি’ বলেও জানান ইসমত আরা।
সরকারের এই পাঁচ কর্মকর্তা অবৈধ প্রক্রিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার সনদ নেন বলে দুদকের এক তদন্তে বেরিয়ে আসার পর তাদের সনদ বাতিলের সুপারিশ করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
রোববার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেছিলেন, “এই সনদ ব্যবহার করে তারা যদি রাষ্ট্রের সম্পদ নিয়ে থাকেন তাহলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
সরকারি কর্মচারী বিধি অনুযায়ী, এই পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা-ভঙ্গের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা ছাড়াও প্রতারণার মামলা হতে পারে।