দুর্ঘটনার আশঙ্কায় লাল কাপড় উড়িয়ে চট্টগ্রামগামী ‘মেঘনা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি থামিয়ে দেয়ায় বৃদ্ধ কৃষক তাজুল ইসলামকে পুরস্কার দিয়েছে পুলিশ।
Published : 28 Nov 2013, 04:13 PM
দুর্ঘটনা থেকে তিন শতাধিক যাত্রী রক্ষা পাওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকেলে ষাট বছর বয়সী এই কৃষকের হাতে অর্থসহ প্রশংসাপত্র তুলে দেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. আমির জাফর।
চার ছেলে ও এক মেয়ের বাবা শাহরাস্তি পৌরসভার উপলতা গ্রামের বাসিন্দা তাজুল বলেন, “এতগুলো যাত্রীর জীবন বাঁচাতে পাইরা আমার খুব ভালা লাগছে।”
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো. আমির জাফর বলেন, “কৃষক তাজুল ট্রেন যাত্রীদের জীবন রক্ষা করেছেন।
“তার এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ আমি ব্যক্তিগতভাবে ২০ হাজার টাকা এবং পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রশংসাপত্র দিয়েছি।”
ভবিষ্যতে তাজুলকে যে কোনো সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসন আন্তরিক থাকবে বলে জানান তিনি।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলের ডাকা অবরোধকালে নাশকতা চালানোয় দেশের বিভিন্ন জায়গায় রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে।
১৮ দলের অবরোধের দ্বিতীয় দিন বুধবার ভোরে ফজরের নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন তাজুল। এ সময় চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের উয়ারুক ও মেহের স্টেশন এলাকায় স্লিপার উপড়ানো দেখতে পান তিনি।
ভোরে এ পথে ট্রেন যায় জানা থাকায় বিপদের আশঙ্কায় তাৎক্ষণিকভাবে লাল কাপড় দেখিয়ে মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি থামিয়ে দেন তিনি।
এভাবে দুর্ঘটনা থেকে ট্রেনটি রক্ষা করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তার ব্যাপক প্রশংসা শুরু হয়।
এদিকে তার প্রশংসা করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “তাকে স্যালুট করি। এই কৃষকের কাছ থেকে বিরোধীদলের শিক্ষা নেয়া উচিত।”
“কৃষক যখন মনে করেন, মানুষের জীবন বাঁচানো তার দায়িত্ব, আর বিএনপি-জামায়াত রেললাইনের ফিসপ্লেট তুলে মানুষ হত্যা করতে চায়।”
তাজুল পুরস্কার পাওয়ার পর মেহের রেলস্টেশন মাস্টার মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, “তাজুল না জানালে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারত। তার কারণে ট্রেনের যাত্রীরা প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
এ নাশকতার ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দা সবুজ, কালাম ও আরিফ দাবি করেন- ‘যারা হরতাল-অবরোধের নামে এমন কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক।’
দুর্ঘটনার কবল থেকে ট্রেন রক্ষা করায় কৃষক তাজুলকে শুক্রবার সকালে ঢাকায় আমন্ত্রণ জানিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়।
সেখানে তাকে রেল কর্তৃপক্ষ সংবর্ধনা দেয়া হতে পারে বলে জানায় পুলিশ।