রংপুরে সংঘর্ষ, নিহত ৫

রংপুরের মিঠাপুকুরে পুলিশ-জামায়াত সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2013, 05:01 AM
Updated : 28 Feb 2013, 09:36 AM

এছাড়া দশজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন কমপক্ষে ১০০ জন।তাদের মধ্যে ৫০ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়ের পরপরই বৃহস্পতিবার দুপুরের পর জামায়াতকর্মীরা মিছিল নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালালে এই সংঘর্ষ বাঁধে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মিঠাপুকুর থানার ওসি আবু হেনা মোস্তফা কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে চারজন নিহত হন।

নিহতরা হলেন, উপজেলার কাফ্রিখাল ইউনিয়ন জামায়াতের সদস্য সাহেদ আলী(৪৫), উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, শিবিরকর্মী সাদেকুর রহমান ও মাহমুদুল হাসান।

তাদের লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে।

এদিকে মিঠাপুকুর থানার পরিদর্শক রেজাউল করিম রেজা জানান, রাত ৮টার দিকে একটি ধানক্ষেত থেকে অন্য  এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়।

উপজেলা জামায়াতের আমীর গোলাম রব্বানী বলেন, নিহত যুবক মিঠাপুকুর উপজেরার ইমাদপুর এলাকার আশিকুর রহমান (২০)। তিনি স্থানীয় ছাত্র শিবিরের কর্মী।

ওসি সাংবাদিকদের বলেন, সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ৭০ রাউন্ড গুলি চালাতে বাধ্য হয়। 

উপজেলা জামায়াতের আমীর গোলাম রব্বানী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুলিশের গুলিতে নিহত পাঁচজনই জামায়াত ও শিবিরের কর্মী। ৫০ জনের বেশি গুলিবিদ্ধ হন বলেও তিনি দাবি করেন।

সহকারি পুলিশ সুপার (সার্কেল বি) সেলিম হায়দার জানান, বেলা ৩টার দিকে উপজেলার বাসস্ট্যান্ডের দলীয় কার্যালয় থেকে জামায়াত-শিবির প্রতিবাদ মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলা পরিষদ চত্বরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়া হয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। মূহুর্তের মধ্যে পুলো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে।

এক পর্যায়ে মিছিলকারীরা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। হামলা চালায় সেনালী ব্যাংকে। এসময় আত্মরক্ষা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মিছিলকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এদিকে পীরগাছা থানার পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম জুয়েল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বেলা ৩টায় পীরগাছা উপজেলার রেলস্টেশন এলাকায় জামায়াত-শিবির ও বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পুলিশসহ ৫০ জন আহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয় ৩ জন। আহদের মধ্যে পীরগাছা থানার ওসিসহ ১২ জন পুলিশ ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা রয়েছেন। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ কনস্টেবল মোজাহারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ শিবিরকর্মী  সাইফুল, হানিফ ও বাবলুকে ভর্তি করা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর পরপরই মিঠাপুকুর উপজেলা সদরে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা মিছিল বের করে।

মিছিলকারীরা পুলিশের ওপর ইট ছোড়ে এবং রড নিয়েও হামলা চালায় বলে স্থানীয়রা জানায়।

ওসি মোস্তফা কামাল বলেন, সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন গুলিবিদ্ধ হন।