দুই দলের 'মন কষাকষিতে' মানুষ অতিষ্ঠ : মতিন

দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের 'মন কষাকষিতে' দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2011, 08:08 AM
Updated : 20 Feb 2011, 08:08 AM
ঢাকা, ফেব্র"য়ারি ২০ ( বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম )- দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের 'মন কষাকষিতে' দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন।
রোববার বিকালে রাজধানীতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মতিন বলেন, "বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের রাজনীতিও আজ কঠিন সময় অতিক্রম করছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়ই বুর্জোয়া দল। তাদের মন কষাকষি ও দর কষাকষিতে মানুষ আজ অতিষ্ঠ ও অস্থির হয়ে উঠেছে। এই দুই দল কোনো দিকনির্দেশনাই দিতে পারছে না।''
এই 'অস্থিরতার' অবসানে আগামী নির্বাচনে জনগণ একটি ভালো সরকার প্রতিষ্ঠায় রায় দেবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই ভাষা সৈনিক।
্িবকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির '২১ ফেব্র"য়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস' শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
দলীয় আলোচনা সভায় একজন ভাষা সৈনিককে প্র্রধান অতিথি করার নজির এই প্রথম। সাধারণত এ ধরনের আলোচনা সভায় দলের মহাসচিবই প্রধান অতিথি থাকেন।
বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন অসুস্থ থাকায় তিনি আলোচনা সভায় যোগ দিতে পারেননি।
দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির উদ্দেশে আবদুল মতিন বলেন, এই দুটি বুর্জোয়া দল সাধারণ মানুষের কথা ভুলে গিয়ে সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়। ফলে জনপ্রত্যাশা পূরণ হয় না।
তবে তিনি স্বীকার করেন যে, এ দুই দলের যেমন দোষ রয়েছে, তেমনি গুণও আছে।
মাটি-মানুষের রাজনীতির সঙ্গে নিজের নিজের দীর্ঘদিনের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে মতিন বলেন,'' আমরাও আপনাদের মতো রাজনীতিতে আছি। তবে অদূরদর্শিতার কারণে আমরা জনগণ থেকে দূরে আছি। আপনারা জনগণের কাছাকাছি।''
শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দলের দায়িত্বের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
শহীদ দিবস উপলক্ষে বিএনপি দুইদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
একুশের প্রথম প্রহরে বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দলীয় নেতাদের নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। পরে সোমবার সকাল ৭টার দিকে দলের মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ারের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
দিবসটি উপলক্ষে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।
আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বর্তমান সরকার গণতন্ত্রের লেবাসে একদলীয় বাকশালী ব্যবস্থায় দেশ পরিচালনা করছে। দেশে গণতন্ত্র নেই, আছে ফ্যাসিবাদী শাসন।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়ন না করে 'বন্ধু-প্রভুদের এজেন্ডা' বাস্তবায়নে ব্যস্ত রয়েছে।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও পূঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার 'ব্যর্থ' হয়েছে দাবি করে খন্দকার মোশাররফ সরকারকে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ বলেন, একুশ ও স্বাধীনতার চেতনা রক্ষায় সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। দেশ আজ সংকটাপন্ন।
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে জনগণকে একতাবদ্ধ হয়ে দেশ রক্ষার আন্দোলনে শরিক হতে হবে।
দলের সহসভাপতি ও ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে সহসভাপতি সেলিমা রহমান, আবদুল্লাহ আল নোমান, বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, রহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন, যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, মহিলা দলের সভাপতি নুরে আরা সাফা, উলামা দলের সভাপতি হাফেজ আবদুল মালেক, জাসাস সভাপতি এম এ মালেক, ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের প্রচার সস্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএম/এইচএ/২০০০ ঘ.