সোমবার রাতে তাঁর মোহাম্মদপুরের বাসায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আব্দুল মতিন এসময় বলেন, "যে ভাষার জন্য সংগ্রাম হলো, জীবন দিতে হলো সেই বাংলা এখনও সর্বস্তরে চালু হয়নি এটা কোন ভাবেই ঠিক নয়। মনে রাখতে হবে, বাঙালিদের ভালো করে ইংরেজি শিখতে হলেও বাংলা জানতে হবে। কারণ ভালো বাংলা ছাড়া ভালো ইংরেজিও শেখা যাবে না।"
দেড়ঘণ্টাব্যাপী সাক্ষাতকারের প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই ছিল ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিকথা। পশ্চিম বাংলার দার্জিলিংয়ে পড়ার সময় প্রথম বাংলা ভাষার প্রয়োজনীয়তার উপলব্ধি থেকে শুরু করে আহ্বায়কের দায়িত্ব নিয়ে ভাষা আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালনা, জেল জুলুম, জিন্নাহর বক্তৃতার প্রতিবাদ, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ২১ ফেব্র"য়ারির সেই ইতিহাস জন্ম দেওয়া মিছিল সবই উঠে আসে সাক্ষাতকারে।
৮৩ বছর বয়সী এই যোদ্ধা এখনও আশাবাদী। তিনি বলেন "আমি এখনও খুব আশাবাদী। আমার মতো মানুষ যেখানে শূন্য থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলনের মতো সংগ্রামে জয়ী হয়েছি, সেখানে নতুন প্রজন্ম হতাশ না হয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে- এটাই আমার বিশ্বাস।"
ভাষা আন্দোলনের প্রায় প্রতিটি বিষয়ই তাকে নাড়া দিলেও একসঙ্গে সবাইকে আন্দোলনমুখী করার ব্যাপারটাই তাকে বেশি নাড়া দেয়।
আব্দুল মতিন বলেন, "যেখানে কেউ সাহস করে এগিয়েই আসত চাইত না, সেখানে সবার আন্দোলন মুখী হওয়ার বিষয়টি এখনও আমাকে আলোড়িত করে।"
দেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "সবখানেই মৌলবাদীদের থাবা। এখনও জামায়াতের কিছুই হলো না।"
সর্বস্তরে বাংলা চালু না হওয়ার জন্য আমলাদের দায়ী করে ভাষা সৈনিক বলেন, "তারা চায় না সবখানে বাংলা চালু হোক। আসলে দেশটা এখন আর জনগণের নেই। এটা আমলাদের হয়ে গেছে।"
বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত আব্দুল মতিন বয়সের ভারে ক্লান্ত। সেটাই ফুটে উঠলো তার শেষ কথায়, "৮৩ বছর বয়স, আর পারি না। নানা অসুখে ভুগছি। স্ত্রীর সহযোগিতায় বেঁচে আছি।"