পাশাপাশি এনবিআরের পক্ষ থেকে দাবি করা করের অর্থ আদায়ে ট্যাকসেস আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া আদেশের বৈধতার প্রশ্ন তুলে রুল জারি করেছে আদালত।
মঙ্গলবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে আইনি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’ এর এক রিট আবেদনের শুনানির পর এ আদেশ আসে।
রুলে কর দাবি সংক্রান্ত ট্যাকসেস আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চায় আদালত।
কর আপিলেট ট্রাইব্যুনালের (সার্কিট বেঞ্চ- ২) চেয়াম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং কর অঞ্চল-১৫ এর ডেপুটি কমিশনারকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের আইনজীবী রমজান আলী শিকদার বলেন, “আমরা আগেই ট্যাক্সের সব অর্থ পরিশোধ করেছি, এরপর তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল করতে মোট দাবির ওপর ১০ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হয়।
“আমরা হিসেব করে সেই অনুযায়ী ৮৩ লাখ টাকা জমা দিয়েছিলাম। এরপর আমরা হাই কোর্টে রিট করি। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও আদালতের অ্যাসেসমেন্টের পর নির্দেশনা অনুযায়ী আরও ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা জমা করি।
“এখন ১০ শতাংশ পূরিপূর্ণ হয়েছে। আজ আদালত আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশে বৈধতার প্রশ্নে রুল দিয়েছে এবং ওই কর বর্ষের আয়কর আদায় সংক্রান্ত কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছে।”
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ, রমজান আলী শিকদার, মোস্তাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে এক কোটি চার লাখ তিন হাজার ৪৯৫ টাকা আয়কর রিটার্ন দাখিল করে কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস।
কিন্তু ওই অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তার নামে ২০ কোটি ১১ লাখ চার হাজার ২১৯ টাকার সম্পদ দেখিয়ে ছয় কোটি নয় লাখ ৮৫ হাজার ৩১৫ টাকা আয়কর এবং আরও ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬৩৪ টাকা সুদ দাবি করে।
২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একজন ডেপুটি কমিশনারের দেওয়া চিঠিতে কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসকে এই টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়।
পরে রাজস্ব বোর্ডর ডেপুটি কমিশনারের ওই কর দাবির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট যুগ্ম কমিশনারের কাছে আপিল করে কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস। ওই আপিল শুনানি শেষে ২০২০ সালের ২৫ জুন তা খারিজ করে আদেশ দেওয়া হয়।
এরপর যুগ্ম কমিশনারের দেওয়া ওই আদেশের বিরুদ্ধে ট্যাকসেস আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করে কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস।
সে আবেদনটিও খারিজ হয়ে গেলে গত ২৪ মে কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েস্টের পক্ষে হাই কোর্টে রিট করেন আইনজীবী শরীফ এম এন ইউ ভূইয়া।
তাদের রিট আবেদনের ওপর বিচারপতি সৈয়দ রিফাত আহমেদ ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের বেঞ্চে দুই দিন শুনানি হয়। ওই বেঞ্চে এ রিটের আদেশ দেওয়ার এখতিয়ার না থাকায় গত ১৪ জুন আবেদনটি ফেরত দেওয়া হয়।
পরে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের বেঞ্চে রিট আবেদনটি উপস্থাপন করা হলে গত রোববার শুনানির পর মঙ্গলবার এ আদেশ দেওয়া হল।
আরও খবর