এর আগে সেলিম মোল্লার প্রথম স্ত্রী পারভিন আক্তারেরও একই অপরাধে ছয় বছরের সাজার রায় হয়েছিল।
দুর্নীতির মাধ্যমে ‘কোটিপতি’ বনে যাওয়া সেলিম তার দুই স্ত্রীর নামে অবৈধ সম্পদ গড়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠার পর দুর্নীতি দমন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
হাফিজার বিরুদ্ধে মামলায় মঙ্গলবার ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসেন রায় দেন।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জানান, কারাদণ্ডের পাশাপাশি হাফিজাকে ৮৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। যা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় হাফিজা আদালতে হাজির ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাফিজা সরকারি আবাসন পরিদপ্তরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক হিসাবে কাজ করতেন।
২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর একটি পত্রিকায় ‘মালি থেকে কোটিপতি সেলিম মোল্লা’ শিরোনামে খবর প্রকাশ হয়।
এরপর দুদক ২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর হাফিজাকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস দেয়। ওই বছরের ৩১ অক্টোবর তিনি তা দাখিল করেন।
সম্পদ বিবরণী যাচাই করে দুদক হাফিজার বিরুদ্ধে ২৬ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন এবং ৮৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ রমনা থানায় মামলা করে।
২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর অভিযোগপত্র জমা হওয়ার পর ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর আদালত হাফিজার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। ৭ জন সাক্ষীর মধ্যে চারজনের সাক্ষ্য নিয়ে মঙ্গলবার বিচারক রায় দেন।
সেলিমের প্রথম স্ত্রী পারভীনকেও ২০১৭ সালে সম্পদ বিবরণি দাখিল করতে বলা হয়েছিল। তিনি তা জমা দেওয়ার পর ২৭ লাখ ৯৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং এক কোটি ২৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়ে তার বিরুদ্ধেও মামলা করে দুদক।
সেই মামলায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পারভীনকে দুটি ধারায় তিন বছর করে ৬ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয় আদালত।
সরকারি নিয়োগ পেয়ে ১৯৮৪ সালে সেলিম গণপূর্ত অধিদপ্তরে মালি পদে যোগ দেন। তার চাকরি শুরু হয় অধিদপ্তরের আরবরি কালচার বিভাগে।
পরে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে দীর্ঘদিন প্রেষণে নিয়োজিত ছিলেন তিনি।
তখন দাপ্তরিক কাজে প্রভাব বিস্তার করে অবৈধ সুযোগে-সুবিধা নিয়ে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি সম্পদ অর্জন করেন দুদক কর্মকর্তাদের ভাষ্য।