চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে নীলক্ষেত অবরোধ

সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বৃদ্ধিসহ চার দাবিতে ঢাকার নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করেছে একদল চাকরিপ্রত্যাশী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2022, 06:57 AM
Updated : 16 Jan 2022, 06:57 AM

রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে  'সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য পরিষদ' ব্যানারে নীলক্ষেত মোড়ে সড়ক আটকে তাদের বিক্ষোভ শুরু হয়। এতে আশপাশের রাস্তাগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র জট তৈরি হয়।

বয়সসীমা বাড়ানো ছাড়াও তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হল- নিয়োগ পরীক্ষায়  দুর্নীতি ও জালিয়াতি বন্ধ করতে হবে, নিয়োগ পরীক্ষার (বিসিএস প্রিলিমিনারি ও রিটেন) প্রাপ্ত নম্বরসহ ফলাফল প্রকাশ করতে হবে, চাকরিতে আবেদনের ফি সর্বোচ্চ ১০০ টাকা করতে হবে, একই সময়ে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ করে সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

আব্দুল্লাহ আল-মামুন নামে এক চাকরিপ্রত্যাশী অবরোধ কর্মসূচিতে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়, পরিস্থিতি অনুযায়ী বাস্তবতার নিরিখে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধির যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

“কিন্তু চরম দুর্ভোগে দীর্ঘ সেশনজট ও করোনায় প্রায় দুই বছর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া চরম বাস্তবতার মাঝেও তিন বছর আগে ছাত্রসমাজকে দেওয়া সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। ইশতেহারের বাস্তবায়ন যুব সমাজের প্রাণের দাবি।"

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩০ বছর, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে ৩২ বছর। এই সীমা বাড়ানোর দাবি বেশ কয়েক বছর ধরেই রয়েছে, যদিও সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।

মহামারীর মধ্যে নিয়োগ বন্ধ থাকায় যারা ক্ষতির মুখে পড়েছে, তাদের জন্য দুই দফা সুযোগ দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যাদের চাকরির বয়স শেষ হয়ে গিয়েছিল, গত সেপ্টেম্বরেও তাদের সরকারি চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু মহামারী প্রলম্বিত হতে থাকায় গত বছর আরেক দফা সুযোগ দেওয়া হয়। বলা হয়, ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যাদের বয়স ৩০ বছর হয়েছে, তারাও আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকাশিতব্য সব সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পুরনো তারিখে বয়সে ছাড়ের ওই প্রজ্ঞাপনকে ‘প্রহসনমূলক’ আখ্যা দিয়ে আল-মামুন বলেন, “বিজ্ঞপ্তিতে বলা হচ্ছে শুধু সেই নিয়াগে বিজ্ঞপ্তি এই নিয়মের আওতায় আসবে, যে সকল নিয়াগে বিজ্ঞপ্তি করোনাকালে হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এখনও তা প্রকাশিত হয়নি।

“বিগত ১৭ মাসে যে অল্প কিছু নিয়াগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল, সেগুলোর অধিকাংশগুলোতেই এই ব্যাকডেট পদ্ধতি না থাকায় আবারও ৩০ এর উপরে চাকরি প্রত্যাশীরা আবেদন করার সুযাগে পায়নি। আসন্ন সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত প্রকাশিতব্য সকল নিয়াগে বিজ্ঞপ্তিতেও চাকরি প্রত্যাশীরা আবেদন করতে পারবে না উল্লেখিত নিয়মের বেড়াজালের কারণে।

“তাই আগামী সার্কুলারগুলোকেও এই ছাড়ের আওতায় এনে ছাত্র সমাজের অধিকারকে প্রাধান্য দেওয়া যথার্থ ও যৌক্তিক বলে মনে করছি এবং স্থায়ীভাবে বয়স বৃদ্ধি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়, যা এখন সময়ের সবচেয়ে ন্যায্য দাবি।”