নারায়ণগঞ্জে ভোটে স্বাস্থ্যবিধির সঙ্গে স্মার্ট বুথ

করোনাভাইরাস সংক্রমণ আবার বাড়ছে বলে যখন নানা বিধি-নিষেধ ফেরানো হচ্ছে, তখন নারায়ণগঞ্জে চলছে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জমজমাট প্রচার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2022, 06:11 PM
Updated : 11 Jan 2022, 06:14 PM

এই পরিস্থিতিতে রাজধানীর পাশের এই নগরীতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোটের আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।

আগামী ১৬ জানুয়ারি রোববার নারায়ণগঞ্জ সিটি ভোটের পুরোটাই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নেওয়া হবে।

আর ভোটের গোপনীয়তা রক্ষায় এবার সেখানে স্মার্ট বুথের পরীক্ষামূলক ব্যবহার হবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব।

২০২০ সালে দেশে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পর সব নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছিল। তারপর পরিস্থিতির উন্নতিতে ভোট আয়োজনের পথ খোলে।

করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট পরিস্থিতি নাজুক করে তুললে গত বছরের মাঝামাঝিতে ভোট আয়োজন বন্ধ ছিল।

এরপর পরিস্থিতির উন্নতি দেখে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শুরুর পর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনও আয়োজনে হাত দেয় ইসি।

কিন্তু ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এসে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়ানোর পর বাংলাদেশেও কয়েকদিন ধরে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় নানা বিধিনিষেধ ফিরিয়ে আনে।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে উন্মুক্ত স্থানে সমাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জে এখন যেভাবে সাতজন মেয়র প্রার্থী এবং ১৮২ জন সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার চলছে, তাতে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।

এই পরিস্থিতি নিয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক দেবনাথ বলেন, “সংক্রমণ ঠেকাতে আবার কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার। কিন্তু ভোট না করার মতো কোনো পরিস্থিতি হয়নি। প্রার্থীদের প্রচারণাও দুয়েকদিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।”

প্রচারে মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী।

প্রচারে মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার।

ভোটের ৩২ ঘণ্টা আগে সব ধরনের প্রচার বন্ধ করতে হয়। সেক্ষেত্রে শুক্রবার মধ্যরাতেই শেষ হবে নারায়ণগঞ্জ সিটি ভোটের প্রচার।

তারপর একদিন বিরতি রেখে রোববার ভোটগ্রহণ হবে; যেখানে ২০০টির মতো কেন্দ্রে ভোট দেবেন ৫ লাখের বেশি ভোটার।   

স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন ভোটাররা ভোট দিতে পারনে, সেদিকে নির্বাচন কমিশনের নজর রয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব অশোক দেবনাথ।

তিনি বলেন, “করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা ভোটের আয়োজন রাখছি, ভোটাররাও তা মেনেই ভোট দেবে।”

এই ভোটকে সামনে রেখে বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা স্থানীয় প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মত বিনিময়ের কর্মসূচিও রয়েছে।

সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোট গ্রহণের নির্দেশনা সিইসি দেবেন বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এর আগে মহামারীর মধ্যে ভোটের সময় সংক্রমণ এড়াতে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয় ভোট কেন্দ্রগুলোতে। কেন্দ্র-ভোটকক্ষভিত্তিক হ্যান্ড স্যানিটাইজার, টিস্যু ও অন্যান্য সামগ্রী রাখা হয়েছিল। আর সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে স্বাস্থ্যকর্মীও রাখা হয়েছিল নির্বাচনী এলাকায়।

১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও টাঙ্গাইল-৭ আসনের উপনির্বাচন এবং ৫টি পৌরসভায় ভোট রয়েছে। সেখানেও ভোট হবে ইভিএমে।

নারায়ণগঞ্জে স্মার্টবুথ ১০ ভোট কক্ষে

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একটি কেন্দ্রের ১০টি কক্ষে ভোট দেওয়ার গোপনকক্ষে ‘স্মার্ট বুথ’ ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক দেবনাথ।

তিনি বলেন, প্রচলিত ভোট কক্ষগুলোয় ভোট দেওয়ার জন্যে কাপড়ে ঘেরা গোপনকক্ষ তৈরি করা হয়। আগামীতে বিশেষ বোর্ডের ফোল্ডার দিয়ে ভোট দেওয়ার গোপন কক্ষ ব্যবহারের একটি পরীক্ষামূলক কাজ নেওয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জে।

“একটি কেন্দ্রের ১০টি কক্ষে এমন স্মার্ট ভোটকক্ষ ব্যবহার করা হবে। এতে সফল হলে আগামীতে বিষয়টি কমিশন পর্যালোচনা করে দেখতে পারে।”