আবরার হত্যার রায় বহাল থাকবে, প্রত্যাশা বুয়েট শিক্ষার্থীদের

হলগুলোতে এখন আর ‘ভয় নেই’ শিক্ষার্থীদের মনেও ‘নেই কোনো চাপ’। আবরার তার জীবনের বিনিময়ে সুন্দর একটি ক্যাম্পাস দিয়ে গেছে বলে জানালেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2021, 11:29 AM
Updated : 8 Dec 2021, 11:29 AM

তড়িৎ কৌশল বিভাগের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনের যাবজ্জীবন সাজা দেয় আদালত। এতে সন্তুোষ প্রকাশ করে রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান শিক্ষার্থীদের।

বুধবার রায়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে শিক্ষার্থীরা বুয়েট শহীদ মিনারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এসে আসামিদের সাজা শেষ পর্যন্ত বহাল থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন।

বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট।

আবরার হত্যার পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, আসামিদের সাময়িক বহিষ্কার এবং হলগুলোতে নির্যাতন বন্ধ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সংবাদ সম্মেলনে বুয়েটের একজন শিক্ষার্থী বলেন, “হলগুলোতে আমাদেরকে যে ভয়ের মধ্যে থাকতে হতো, সেই ভয় আর এখন নেই। আমাদের ওপর এখন আর কোনো প্রেসার নাই।

“আমরা এটা বলতে পারি, আবরার তার রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে আমাদেরকে একটি সুন্দর বুয়েট ক্যাম্পাস দিয়ে গেছে।”

এ মামলায় আসামিদের সবাই বুয়েটের ছাত্র এবং ছাত্রলীগের কর্মী। অভিযুক্ত ২৫ আসামির মধ্যে ২২ জনের উপস্থিতিতে আদালত রায় ঘোষণা করে। বাকি তিনজন মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

এরা হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ)।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক তিন আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, পলাতক তিনজনকে দ্রুততম সময়ে আইনের আওতায় আনা হোক।”

সংবাদ সম্মেলনে এক শিক্ষার্থী লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমরা মনে করি, এই রায়ের মাধ্যমে আমাদের সকলের আস্থার প্রতিফলন ঘটেছে। আমরা এই রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।

“একই সাথে আমাদের প্রত্যাশা, ভবিষ্যতে বাংলাদেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র শিক্ষক কাউকেই যেন রাজনৈতিক অপসংস্কৃতির বলি না হতে হয় এবং সকল ক্ষেত্রে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকে।”

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সন্তুোষ প্রকাশ করে আসামিদের দণ্ড দ্রুত কার্যকর হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার।

নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত রায় আমরা পেয়েছি। আমরা মনে করি, বিচার বিভাগ সঠিকভাবে বিচার করেছে এবং তাদের প্রজ্ঞা ও আইন অনুযায়ী বিচার করেছেন। 

“সর্বোচ্চ শাস্তি হয়েছে। আমাদের সবারই আশা যে, এটা যেন সল্প সময়ে কার্যকর করা হয়।”

এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, “ভবিষ্যতে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের এটাই মনে রাখতে হবে, যদি কেউ এই ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়, তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি ভোগ করতে হবে।”

আরও পড়ুন