রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ‘কাজ করে যাওয়ার’ আশ্বাস জাপানের

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ‘কাজ করে যাওয়ার’ আশ্বাস দিয়েছেন জাপানের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2021, 03:52 PM
Updated : 2 Dec 2021, 03:52 PM

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইয়োশিমাসাকে অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর লেখা চিঠির উত্তরে এই আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।

২০১৯ সালে দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পক্ষেই কথা বলে আসছে, কিন্তু কার্যকর কোনো উদ্যোগ তাদের তরফ থেকে দেখা যায়নি।

ক্ষমতাধর দেশগুলোর এমন অবস্থানের সমালোচনা করে আসছে বাংলাদেশের সরকার ও অধিকারকর্মীরা।

বাণিজ্য স্বার্থের বিবেচনায় মিয়ানমারের পাশে থাকার ঘোষণা দিলেও ২০১৯ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ সফরে এসে প্রত্যাবাসন নিয়ে দেশটির সঙ্গে মধ্যস্ততার কথা বলেছিলেন জাপানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তারো কোনো।

এরপর দুই বছরের বেশি সময় গড়ালেও জাপানের মত বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কোনো ভূমিকা না দেখায় হতাশার কথা বলেছে বাংলাদেশ সরকার।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাপানের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে সম্প্রতি চিঠি লেখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। এর জবাবে তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে পাঠানো চিঠিতে রোহিঙ্গা সঙ্কটে সহযোগিতার কথা বলেন জাপানি মন্ত্রী।

জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের নিরাপদে, স্বেচ্ছায় এবং সম্মানজনকভাবে প্রত্যাবাসনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে জাপান কাজ করে যাবে।

বাংলাদেশের পদক্ষেপে সহযোগিতার পাশাপাশি দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর লক্ষ্যে বিদ্যমান অচলায়তন থেকে উত্তরণের জন্য জাপান মিয়ানমারকে উৎসাহিত করবে বলেও চিঠিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

হায়াশি ইয়োশিমাসা বলেন, জাপান এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক ‘আস্থা, সহযোগিতা ও পারস্পরিক কল্যাণের’ দৃঢ় নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ২০২২ সালে দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে এই ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।

বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে একসাথে কাজ করার প্রত্যাশার কথাও জাপানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন।