বীমা কর্তৃপক্ষে মোশাররফের নিয়োগ বৈধ কিনা জানতে চায় হাই কোর্ট

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সদস্য ও চেয়ারম্যান হিসেবে এম মোশাররফ হোসেনের নিয়োগের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Sept 2021, 04:41 PM
Updated : 30 Sept 2021, 04:41 PM

নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বৃহস্পতিবার এ নিয়ে রুল দেয় বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান ও কারিশমা জাহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১০ এর ৭(৩)(খ)ধারা অমান্য করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য ও চেয়ারম্যান হিসেবে এম মোশাররফ হোসেনের নিয়োগ এবং এ আইনের ১৪(১)(গ) ও ১৪(২) ধারা অনুযায়ী চেয়ারম্যানের পদ থেকে তাকে অপসারণ না করার নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগের সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এম মোশাররফ হোসেন ২০১৮ সালের এপ্রিলে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান। তার দুই বছর পর অর্থাৎ ২০২০ সালে সেপ্টেম্বরে তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।  

আইনজীবী কারিশমা জাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে এম মোশাররফ হোসেন ২০১৭ সালের ৯ মে যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর থেকে ‘লাভস এন্ড লাইভ অর্গানিক লি.’ নামে একটি কোম্পানির বিন্ধন নেন।

“এই কোম্পানির ব্যবস্থানা পরিচালক তিনি নিজে এবং পরিচালক হলেন তার স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়া। এরপর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ‘গুলশান ভ্যালি এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লি.’ নামে আরেকটি কোম্পানির নিবন্ধন নেন। সেটিতেও তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন এবং তার স্ত্রী পরিচালক।”

এ আইনজীবী বলেন, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১০ এর ৭(৩)(খ) ধারায় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও সদস্যের যোগ্যতা ও অযোগ্যতার কথা বলা আছে। এম এম মোশাররফ হোসেন ২০১৮ সালে যখন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান তখন তিনি নিবন্ধিত দুটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক; যা আইনের ৭ ধারা অনুযায়ী তিনি হতে পারেন না। সদস্য হয়েই তো তিনি চেয়ারম্যান হয়েছেন। যে ব্যক্তির সদস্য পদই অবৈধ তিনি তো চোরমান হতে পারেন না। যে কারণে আমার মক্কেল তার নিয়োগ চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছেন।”

এম মোশাররফ হোসেন এখনও নিবন্ধিত দুটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে আছেন কিনা জানতে চাইলে আইনজীবী কারিশমা জাহান বলেন, “আমি নিশ্চিত না। থেকে থাকলে রুল শুনানির সময়ই তা জানা যাবে।”

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১০ এর ৭(৩)(খ) ধারায় বলা হয়েছে, তিনি (চেয়ারম্যান বা সদস্য) বীমা মধ্যস্থতাকারী বা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন কোন সংস্থার বা উক্তরূপ নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী হন বা তিনি কোন কোম্পানী বা সংস্থার (সরকারী বা বেসরকারি) পরিচালক বা অন্য কোন পদে নিযুক্ত থাকেন;

আর আইনটির ১৪(১) ও (২) উপধারায় চেয়ারম্যান বা সদস্যকে আপসারণের বিষয়ে বলা আছে।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে এম মোশাররফ হোসেনকে সদস্য ও চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগে অভিযোগ তুলে তা খতিয়ে দেখতে বিবাদিদের চিঠি দেন বিনিয়োগকারী আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিন মেহেদী।

কিন্তু এ বিষয়ে বিবাদীদের কাছ থেকে জবাব না পেয়ে এম মোশাররফ হোসেনের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত রোববার হাই কোর্টে জনস্বার্থে রিট করেন তিনি।