বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর ৫ সুপারিশ

বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে আরও বেশি খাদ্য উৎপাদনের চ্যালেঞ্জকে বদলে যাওয়া জলবায়ু যে আরও কঠিন করে তুলেছে, সে বিষয়টি বিশ্বনেতাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

গোলাম মুজতবা ধ্রুব নিউ ইয়র্ক থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2021, 07:52 PM
Updated : 23 Sept 2021, 07:52 PM

একটি ‘স্থিতিশীল বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থা’ গড়ে তোলার জন্য পাঁচ দফা সুপারিশ তিনি তুলে ধরেছেন জাতিসংঘের একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে।

বুধবার নিউ ইয়র্কে ‘জাতিসংঘ ফুড সিস্টেমস সামিট ২০২১’ শীর্ষক এ বৈঠকে তিনি রেকর্ড করা ভিডিও বক্তৃতা দেন।   

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পর্যাপ্ত খাবার পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। সকল নাগরিকের কল্যাণ ও সুস্বাস্থ্যের বিষয়টি এর সঙ্গে যুক্ত। বৈশ্বিক যে খাদ্য ব্যবস্থা, তার সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব প্রবল।

“খাদ্য নিরাপত্তার সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিও ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের জনসংখ্যা হবে ১০ বিলিয়ন। এই বাড়তি জনসংখ্যার জন্য আমাদের আরও খাদ্য উৎপাদন করতে হবে।”

সেজন্য পাঁচ দফা সুপারিশ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষির উন্নয়নের জন্য গবেষণা, বিনিয়োগ ও উন্নত প্রযুক্তি বিনিময় বাড়াতে হবে।

একটি টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বর্ধিত তহবিল যোগানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি বলেন।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার তাগিদ দেন শেখ হাসিনা।

পাশাপাশি খাবারের অপচয় কমিয়ে আনার ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি।

জলবয়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা ও অভিযোজন সক্ষমতা বাড়াতে প্রযুক্তি হস্তান্তরের পাশাপাশি প্রতিশ্রুত তহবিল ছাড়েরও আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

এ সম্মেলনে আয়োজনে নেতৃত্ব দেওয়ার জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “মহামারী পরবর্তী পুরুদ্ধার এবং স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে এ বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ।”

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনায় প্রণীত বাংলাদেশের সংবিধানে খাদ্য ও পুষ্টিকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

“আমরা এজেন্ডা ২০৩০ (এসডিজি) অর্জনে আমাদের জাতীয় নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টিকেও অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছি।”

সেই আলোকেই অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, জাতীয় কৃষি নীতি-২০১৮, জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি-২০২০ এবং এর কর্মপরিকল্পনা (২০২১-২০৩০) প্রণয়নের কথা তিনি বৈঠকে তুলে ধরেন। 

তিনি বলেন, “বর্তমানে আমাদের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির হার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকে ছাড়িয়ে গেছে। খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ হয়ে উঠেছি এবং আমরা দীর্ঘমেয়াদী খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমরা কাজ করছি।

“তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘনঘন চরম আবহাওয়া আর দুর্যোগ আমাদের সেই চেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে।”

বাংলাদেশ যে জলবায়ু-সহিষ্ণু কৃষি ও খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করছে, সে কথাও শেখ হাসিনা বলেন।

“খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি সবার জন্য মানসম্মত খাবার নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা আমরা জোরদার করেছি।”