রাজাকারপুত্রদের ‘দম্ভ চূর্ণ’ করার আহবান আইজিপির

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজাকারপুত্ররা ‘আমি রাজাকারপুত্র’ বলে যে দম্ভ প্রচার করছে তা ভেঙে দিতে সাধারণ মানুষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2021, 01:56 PM
Updated : 28 July 2021, 02:02 PM

বুধবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ভার্চুয়ালি নোয়াখালী জেলা পুলিশ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।

এই অনুষ্ঠান থেকে নোয়াখালী জেলা পুলিশ নির্মিত মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্য ‘নির্ভিক’, নবনির্মিত সুধারাম মডেল থানা, সোনাপুর পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশ লাইন্সে নারী ব্যারাক ভবন উদ্বোধন এবং ‘মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ নোয়াখালী জেলা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয় বলে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে বেনজীর আহমেদ বলেন, “আমরা হতভম্ব হয়ে দেখি রাজাকারপুত্ররা দম্ভের সাথে চিৎকার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বলছে, ‘আমি রাজাকার পুত্র’।

“স্বাধীনতার মাত্র পঞ্চাশ বছরের মধ্যে এ রাজাকারের পুত্র-সন্তানরা কিভাবে এ দুঃসাহস পায় বাংলার মাটিতে, যারা দু'লক্ষ নারীর সম্ভ্রম হরণ করেছে, লক্ষ লক্ষ মানুষকে খুন করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে তা‌দের পক্ষ নিয়ে দম্ভ করার।“

এ ‘দম্ভ চূর্ণ’ করতে তিনি সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে তার আহবানে সাড়া দিয়ে আমাদের পূর্বসূরীরা যে দেশটিকে আমাদের জন্য উপহার দিয়েছেন, তাদের যে অনবদ্য আত্মত্যাগ, সে আত্মত্যাগের মর্যাদা ধরে রাখার অন্যতম উপায় হচ্ছে পরবর্তী প্রজন্মের সামনে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা।

“এটি একটি ঐতিহাসিক দায়, একটি ঐতিহাসিক কর্তব্য।”

দেশ ও মানু‌ষের জন্য, স্বাধীনতার জন্য স্ত্রী ও সন্তানসহ স্বপ‌রিবা‌রে নোয়াখালী জেলার তৎকালীন পু‌লিশ সুপার আবদুল হা‌কি‌মের মহান আত্মত্যা‌গের কথা সশ্রদ্ধচি‌ত্তে স্মরণ ক‌রেন আই‌জি‌পি।

‌মহান স্বাধীনতা যু‌দ্ধে আত্মত্যাগকারী নোয়াখালী জেলা পুলি‌শের অন্যান্য কর্মকর্তা ও বীর পু‌লিশ সদস্য‌দের অবদান‌কেও সশ্রদ্ধ‌চি‌ত্তে স্মরণ করেন তি‌নি।

তিনি বলেন, “১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এ দেশের মানুষ যে দুর্নিবার আন্দোলনের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছিল আমাদেরকে সেই অহংকারের জায়গাগুলোকে আরও সুসংহত করতে হবে। এক্ষেত্রে এ ধরনের পুস্তক, ভাস্কর্য হতে পারে অন্যতম নিয়ামক, যাতে আমরা কখনো ইতিহাস বিস্মৃত না হই।”

“এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশের যে অবদান, ভূমিকা রয়েছে তা দুটি কারণে ‘ডকুমেন্টেড’ হওয়া দরকার। একটি হল জাতির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অংশ হিসেবে এবং বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ইতিহাস, ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে,” বলেন তিনি।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এর সভাপতি হাবিবুর রহমান, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইকবাল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা শহীদ পুলিশ সুপার আব্দুল হাকিমের মুক্তিযুদ্ধে অনবদ্য অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স প্রান্তে অতিরিক্ত আইজি ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, এস এম রুহুল আমিন ও মোঃ মাজহারুল ইসলাম, এটিইউ'র অতিরিক্ত আইজি মোঃ কামরুল আহসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।