জেলা পর্যায়ে সিনোফার্মের টিকা মিলবে বৃহস্পতিবার থেকে

সারাদেশে জেলা পর্যায়ে বৃহস্পতিবার থেকে চীনের সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকাদান শুরু হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 June 2021, 09:45 AM
Updated : 30 June 2021, 09:45 AM

দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সব জেলা হাসপাতাল, সদর হাসপাতাল, ২৫০ শয্যার হাসপাতালে এই টিকা দেওয়া হবে বলে বুধবার অধিদপ্তরের এক বুলেটিনে জানানো হয়। 

অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এমএনসিঅ্যান্ডএইচ) ডা. মো. শামসুল হক বলেন, “টিকা পাওয়ার অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা ছাড়াও ইতোপূর্বে নিবন্ধন করে টিকা পাননি- এমন ব্যক্তিরা সিনোফার্মের এই টিকা পাবেন।”

প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত চলবে টিকাদান কার্যক্রম। অগ্রাধিকার তালিকার জন্য নিবন্ধন কার্যক্রম বুধবার থেকেই খুলে দেওয়া হয়েছে।

“আমাদের মেডিকেল শিক্ষার্থী, নার্সিং শিক্ষার্থী, আইএইচটি-ম্যাটস এবং আমাদের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্ত শিক্ষার্থীরা এই টিকা পাবেন। এছাড়া অন্যান্য অগ্রাধিকার কর্মীরাও নিবন্ধন করে এই টিকা নিতে পারবেন।”

যারা এসব কেন্দ্রে নিবন্ধন করে আগে টিকা পাননি, তারাও এবার টিকা পাবেন জানিয়ে শামসুল হক বলেন, “আপনাদের কাছে কেন্দ্র থেকে এসএমএস যাবে। এসএমএস যাওয়া সাপেক্ষে আগের মতই টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়া যাবে। কেন্দ্রে যাওয়ার সময় অবশ্যই ভ্যাকসিন কার্ড নিয়ে যেতে হবে।”

যেসব প্রবাসী কর্মী সিনোফার্মের টিকা নিতে চান তারাও নিতে পারবেন বলে জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই লাইন ডিরেক্টর।

“আমাদের কাছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী তারা নিবন্ধন করতে পারবেন। নিবন্ধন অনুযায়ী ঢাকার বাইরের কেন্দ্র থেকেও এই টিকা নেওয়া যাবে।”

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকায় ৪৮টি কেন্দ্রের মধ্যে আটটি কেন্দ্র বাদ দেওয়া হয়েছে। সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হবে ঢাকার ৪০টি কেন্দ্রে।

পাশাপাশি ঢাকার সাতটি কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজারের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হবে। 

কেন্দ্রগুলো হল: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কেন্দ্র।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকা দিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়েছিল। কিন্তু ভারত রপ্তানি বন্ধ রাখায় টিকার সঙ্কটে পড়ে বাংলাদেশ।

পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ইতোমধ্যে যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার মত অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাও সরকারের হাতে নেই।

এ অবস্থায় সরকারকে অন্য উৎস থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা করতে হচ্ছে। টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ এবং চীনের উপহার হিসেবে দুই দফায় সিনোফার্মের তৈরি ১১ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসেছে।

সিনোফার্মের কাছ থেকে সরকারি পর্যায়ে দেড় কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কেনার একটি প্রস্তাব সরকার ইতোমধ্যে অনুমোদন করেছে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে জুন, জুলাই ও অগাস্ট মাসে ওই টিকা বাংলাদেশ পাবে বলে সরকার আশা করছে।