করোনাভাইরাস সংক্রমণ মহামারীর মধ্যে নির্ধারিত মেয়াদ শেষে নির্বাচন করতে না পারলে ইউনিয়ন পরিষদে বর্তমান চেয়ারম্যান ও মেম্বাররাই স্বপদে বহাল থাকবেন।
Published : 29 Jun 2021, 10:08 PM
মঙ্গলবার পুরনোদের দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ সচিব মো. আবু জাফর বিপন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই তথ্য জানান।
কোভিড পরিস্থিতিতে ভোট করতে না পারার ‘অসুবিধায়’ এই সিদ্ধান্ত এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সংক্রমণের এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন করা যাচ্ছে না-এই সংক্রান্ত চিঠি নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
“সব বিষয় বিবেচনা করে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে ও সামনে হবে এমন সব ইউপিতে বর্তমানে যারা রয়েছে, তাদেরই দায়িত্ব পালনের বিষয়ে পরিপত্র জারি করা হয়েছে।”
প্রায় সাড়ে চার হাজার ইউপির মধ্যে প্রথম ধাপে ২০৪টির ভোট হয়েছে। কিছু ইউপিতে ইতোমধ্যে মেয়াদ শেষে ৯০ দিনও পার হয়েছে এবং বাকিগুলোর সময় ধাপে ধাপে শেষ হবে।
‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সংক্রান্ত’ এই পরিপত্রে বলা হয়েছে, “বিশ্বের মত বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হওয়ায় জনসমাগম এড়াতে নির্বাচন অনুষ্ঠান স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।
“অতএব, মেয়াদোত্তীর্ণ এবং আশু মেয়াদোত্তীর্ণ হবে এমন ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠান না হওয়া পযন্ত স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ১০১ ধারা মোতাবেক প্রশাসনিক অসুবিধা দূরীকরণার্থে বিদ্যমান ইউপিগুলোকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হলো।“
অবিলম্বে এই আদেশ কার্যকর হবে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়।
স্থানীয় সরকার আইনের ১০১ ধারায় বলা হয়েছে- “অসুবিধা দূরীকরণ- এ আইনের বিধানাবলী কার্যকর করবার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা দেখা দিলে সরকার, এ অসুবিধা দুরীকরণার্থ, আদেশ দ্বারা, প্রয়োজনীয় যে কোনো ব্যবস্থা নিতে নিতে পারবে”।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, “স্থানীয় সরকার বিভাগে গত সপ্তাহেই আমরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছি- করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে [২৯ (৩) ধারা অনুসারে] ইউপি নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না।
বিদ্যমান মহামারী পরিস্থিতিতে কবে নাগাদ ইউপি ভোট করা সম্ভব হবে তাও এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
স্থানীয় সরকার আইনের ২৯ (৫) ধারায় বলা হয়েছে, দৈব-দুর্বিপাকজনিত বা অন্য কোনো কারণে নির্ধারিত ৫ বছর মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে সরকার লিখিত আদেশ দ্বারা, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কিংবা অনধিক ৯০ দিন পর্যন্ত যা আগে ঘটবে, সংশ্লিষ্ট পরিষদকে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্ষমতা দিতে পারে।
এমন সব ইউপির ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী বর্তমানে যারা দায়িত্বে রয়েছে তারাই বহাল থাকবে বলে সোমবার জানান স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
তিনি বলেছিলেন, “ইউপিতে কোনো প্রশাসক নিয়োগের বিধান নেই। সেক্ষেত্রে বর্তমান জনপ্রতিনিধিদেরই বহাল রাখা ছাড়া উপায় নেই। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।“
সচিবের বক্তব্যের পরদিনই পরিপত্র জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।