গরমে ‘হাঁসফাঁস’ চিড়িয়াখানার প্রাণীরা পাচ্ছে তরল খাবার

প্রচণ্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ চিড়িয়াখানার প্রাণীরাও। টানা কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরমে প্রাণীদের স্বস্তি দিতে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে জাতীয় চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষকে।

সাবিকুন্নাহার লিপিসাবিকুন্নাহার লিপিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2021, 01:15 PM
Updated : 27 April 2021, 01:15 PM

পানিশূন্যতায় ভুগতে থাকা প্রাণীদের দেওয়া হচ্ছে তরল খাবার। বদলে দেওয়া হয়েছে খাবারের তালিকাও।

মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ২ এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে মিরপুরের চিড়িয়াখানা। কর্তৃপক্ষ বলছে, দর্শনার্থী না থাকায় সেখানকার বাসিন্দারা ফুরফুরে মেজাজে থাকলেও তাদের আরামে বাগড়া দিচ্ছে গরমের তীব্রতা।

দিনভর চড়তে থাকা গরম থেকে বাঁচতে গাছের ছায়ায় সময় কাটাচ্ছে প্রাণীরা, বাঘ-জলহস্তী-কুমির স্বস্তি নিচ্ছে পানিতে গা ডুবিয়ে।

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বন্ধ মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন কর্মীরা। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

দেশে বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছে তাপদাহ। সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে উষ্ণ এই সময়ে অসহনীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে দেশজুড়ে।

মৃদু থেকে মাঝারি এই তাপপ্রবাহ থেকে পরিত্রাণ পেতে আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করার কথা বলছেন আবহাওয়াবিদরা। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৯ এপ্রিলের দিকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে।

বাড়তে থাকা খরতাপে অতিষ্ঠ প্রাণীদের মধ্যে পানিশূন্যতা তৈরি হয়েছে। সেজন্য তাদের খাবার তালিকায় পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানান জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক আব্দুল লতিফ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গরমে প্রাণীরা শুধু হাঁপাচ্ছে, টেম্পারেচার তো অনেক বেশি। সে কারণে স্যালাইন পানি দিচ্ছি, ভিটামিন সি দিচ্ছি। তরমুজ, বাঙ্গি, শসা খাওয়াচ্ছি। পানির অভাব পূরণ করে, তাদের এমন খাবার দিচ্ছি আমরা।”

করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে ফের বন্ধ থাকায় সুনসান পরিবেশে বেশ ভালোই কাটছে মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানার ইমু পাখির ছানাগুলোর। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

তবে গরমের যন্ত্রণায় পড়লেও দর্শনার্থী না আসায় সেখানকার প্রাণীরা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছে বলে জানান তিনি।

“তারা এখন ফুরফুরে মেজাজে আছে। কোনো দর্শনার্থী নাই, উত্ত্যক্ত করার কেউ নাই। আবার খাবারও ভালো পাচ্ছে। শান্তিতেই দিন কাটাচ্ছে তারা।”

এই সুযোগে প্রাণীদের নানা ধরণের কসরত শেখাচ্ছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। দর্শনার্থীদের বাড়তি বিনোদনের খোরাক দিতেই তাদের অভ্যস্ত করা হচ্ছে বলে জানান পরিচালক লতিফ।

“হাতিকে ফুটবল খেলানো শুরু করেছি। ৭০ ভাগ শিখে ফেলেছে। এরপর বাস্কেটবল খেলা শেখাব। শুধু তাই না, বটগাছেও চড়ে ওরা।”

মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে ফের বন্ধ মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় হাতিকে ফুটবল খেলা শেখানো হচ্ছে। এটা পরবর্তীকালে দর্শনার্থীদের জন্য বাড়তি আনন্দ জোগাবে বলে মনে করেন জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক আবদুল লতিফ। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

এর আগে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে গত বছরের ২০ মার্চ দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল চিড়িয়াখানা। পরে সাত মাসের ছুটিতে চিড়িয়াখানার প্রাণীদের প্রজনন ক্ষমতা বাড়ার কথা জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।

এবারও সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে আব্দুল লতিফ জানান, প্রাণীদের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় নজর দেওয়া হচ্ছে তাদের খাবারের পরিমাণে।

“বাঘ ভাল্লুকের খাবার কমিয়ে দিয়েছি। বাঘ-সিংহের খাবার নয় কেজি থেকে সাত কেজিতে নিয়ে আসা হয়েছে। ওজন বেশি বেড়ে গেলে তাদের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায়।”