দুই সপ্তাহের পূর্ণ লকডাউন চায় জাতীয় কমিটি

অন্তত দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন ছাড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এজন্য সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকায় দুই সপ্তাহের পূর্ণ লকডাউন দেওয়ার সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2021, 10:29 AM
Updated : 9 April 2021, 11:26 AM

দুই সপ্তাহের লকডাউন শেষ হওয়ার আগে সংক্রমণ পরিস্থিতি ও আক্রান্তের হার বিবেচনায় আবার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে বলে পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।

কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে। বুধবার রাতে কমিটির ৩০তম সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বলা হয়েছে, সারাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ১৮টি নির্দেশনা এবং পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেও বিধিনিষেধ দেয়া হয়। এগুলো সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না।

“এ কারণে সংক্রমণের হার বাড়ছে। বিধিনিষেধ আরো শক্তভাবে অনুসরণ করা দরকার।”

কমিটি বলেছে, বিভিন্ন হাসপাতালের সক্ষমতা বাড়াতে সরকারি পর্যায়ে নানা কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। তবে এই কার্যক্রমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাসপাতালের রোগী ভর্তির বাড়তি চাপ থাকায় অতি দ্রুত আরও সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ দিন দিন বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত লকডাউন দেয় সরকার।

সারাদেশে শপিং মল, দোকান-পাট, হোটেল-রেস্তারাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।

তবে বুধবার থেকে সিটি করপোরেশন এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা গণপরিবহন সেবা এবং শুক্রবার থেকে দোকানপাট চালু রাখার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার।

গত রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে ১১ দফা নিষেধাজ্ঞায় সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে খোলা রাখার সুযোগ দেওয়া হয়।

এদিকে পহেলা বৈশাখ ও রোজার আগে দোকান-পাট খুলতে কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ চালিয়ে আসছিলেন দোকান মালিক ও কর্মচারীর।

দাবির মুখে বৃহস্পতিবার ‘কঠোর স্বাস্থ্যবিধি’ প্রতিপালনসাপেক্ষে লকডাউনের মধ্যেও দোকানপাট ও শপিংমলও খোলা রাখার সিদ্ধান্ত দেয় সরকার।

শুক্রবার থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে।

শুক্রবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় এবং জনগণের অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে সরকার ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

তিনি বলেন, “দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার, সঙ্গে বাড়ছে জনগণের অবহেলা ও উদাসীনতা।

“এমতাবস্থায় চলমান এক সপ্তাহের লকডাউনে জনগণের উদাসীন মানসিকতার কোন পরিবর্তন না হওয়ায়, সরকার জনস্বার্থে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা করছে।”