কিশোরের চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন

আদালতের নির্দেশে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোরের চিকিৎসায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিনজন চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2021, 02:37 PM
Updated : 16 March 2021, 02:37 PM

মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর বিকালে তিন সদস্যের এই বোর্ড গঠন করা হয়।

ঢাকা মেডিকেলের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালতের নির্দেশে আমরা তিন সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছি। পরবর্তীতে রোগীর সঙ্গে যোগাযোগ তার চিকিসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মেডিকেল বোর্ডের প্রধান করা হয়েছে নাক, কান গলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শেখ নুরুল ফাত্তাহ রুমীকে। বোর্ডের অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ফকরুল আমিন খান এবং মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হাফিজ সরদার।

গ্রেপ্তারের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে মামলার আবেদন করেছেন কিশোর।

সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশ পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়ে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন।

বিচারক একইসঙ্গে আরেক আদেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা, মেডিসিন এবং অর্থোপেডিকস বিভাগের প্রধানদের সমন্বয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে কমিটিকে ২৪ কর্মঘণ্টার মধ্যে কিশোরের নির্যাতনের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

কিশোরের ভাই আহসান কবীর বলেন, “কিশোরের চিকিৎসার জন্য মহানগর দায়রা জজ একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোরকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। বোর্ড গঠন করার পর আবার তাকে সেই বেসরকারি হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়।

“বোর্ডের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তারা কিশোরকে কবে দেখবেন তার দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি।”

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় নয় মাস কারাগারে থাকার পর গত ৪ মার্চ জামিনে মুক্তি পান কিশোর।

মামলার আবেদনে তিনি অভিযোগ করেছেন, গত বছরের ৫ মে রমনা থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। কিন্তু তারও তিন দিন আগে ২ মে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সাধারণ পোশাকের ১৬-১৭ জন লোক কাকরাইলের বাসা থেকে তাকে ‘জোর করে হাতকড়া ও মুখে মুখোশ পরিয়ে অজ্ঞাত এক নির্জন জায়গায়’ নিয়ে যায়।

সেখানে ২ মে থেকে ৪ মে তার ওপর ‘শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার’ চালানো হয় বলে অভিযোগ করে কিশোর বলেছেন, তার কানে ‘প্রচণ্ড জোরে থাপ্পর মারা হয়’, কিছু সময়ের জন্য বোধশক্তিহীন হয়ে পড়েন তিনি। পরে তিনি বুঝতে পারেন, কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। ‘স্টিলের পাত বসানো’ লাঠি দিয়ে তাকে ‘পেটানো’ হয়। যন্ত্রণা ও ব্যথায় তিনি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন।

আর্জিতে তিনি বলেছেন, পরে তিনি নিজেকে র‌্যাব কার্যালয়ে দেখতে পান। সেখানে তার সঙ্গে লেখক মুশতাক আহমেদের দেখা হয়। মুশতাকের সঙ্গে আলাপ করে জানতে পারেন, মুশতাককে ‘বৈদ্যুতিক শক’ দেওয়া হয়ছে।

জামিনের মুক্তির পর গত ১৩ মার্চ কার্টুনিস্ট কিশোরের ডান কানে টিমপ্যানিক মেমব্রেন রিপেয়ার মিরিংগোপ্লাসটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি যন্ত্র বসানো হয়েছে।