তিনি বলেছেন, “তাদেরকে এই সমাজ যেন আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করে নেয়। ‘তুই জঙ্গি' বলে যেন তাকে আবারও নেতিবাচক পথে ঠেলে দেওয়া না হয়।”
বৃহস্পতিবার ঢাকার উত্তরায় র্যাব সদর দপ্তরে নয়জন জঙ্গির আত্মসমর্পণ উপলক্ষে 'নব দিগন্তের পথে' শীর্ষক আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথা বলেন র্যাব প্রধান।
জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়াদের সুপথে ফেরাতে ‘ডি-র্যাডিকালাইজেশন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন প্রোগ্রাম’ হাতে নিয়েছে র্যাব। এর আওতায় ফিরে আসাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।
র্যাবের মহাপরিচালক মামুন বলেন, “জঙ্গিবাদ একটা আদর্শিক সমস্যা। এটা মোকাবেলার জন্য প্রয়োজন সঠিক ধর্মীয় ব্যাখ্যা। তাদেরকে সমাজের মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে আনতে চাই।”
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার আত্মসমর্পণকারী নয়জনের মধ্যে আটজনই তাদের পরিবারের কাছে ফেরত যাবেন। একজন আইনী কার্যক্রমের মাধ্যমে পরবর্তীতে ফেরত যাবেন।
মামুন বলেন, “জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা আভিযানিক কার্যক্রম আরও বেগবান করব। কোথাও জঙ্গিরা টিকে থাকতে পারবে না। তাই যারা পলাতক আছেন, আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করুন। বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করুন।”
এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল র্যাবের এই পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমদ জঙ্গিবাদ থেকে ফিরে আসাদের অভিনন্দন জানিয়ে অন্যদেরও এই পথ অনুসরণের আহ্বান জানান।
জঙ্গিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “যারা এখনও ওই পথে আছো, তোমারা ফিরে এসো।
“ওই ককটেইল, জর্দার কৌটা বা এ জাতীয় জিনিসপত্র দিয়ে তোমরা কারও বিরুদ্ধেই বিজয়ী হতে পারবে না। বরং ওই পথে গিয়ে তোমরা পরিবার-সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছ। প্রাণ যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই অন্ধকার জগত তোমার নিজেদের, পরিবারকে এবং রাষ্ট্রকে বিপদে ফেলতে পারে।”
জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে পুলিশ প্রধান বলেন, “এখনও যারা এ ধরনের কাজে জড়িত আছে, তাদের প্রতি আমাদের নজরদারি অব্যাহত আছে। র্যাব, অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটসহ একাধিক টিম তাদেরকে নজরদারিতে রেখেছে। আমাদের গোয়েন্দা কমিউনিটিও এ বিষয়ে তৎপর রয়েছে।
“হয়ত পরিপূর্ণভাবে সব ঘটনা শুরুতে বিনষ্ট করতে পারিনি। শতভাগ না হলেও অন্তত ৯০ ভাগেরও বেশি ঘটনা শুরুতেই বিনষ্ট করতে সক্ষম হয়েছি।”
বেনজীর বলেন, বাংলাদেশ বার বার জঙ্গিবাদে আক্রান্ত হয়েছে। তবে এর কোনোটাই বাংলাদেশ থেকে সৃষ্টি হয়নি। প্রতিবারই বাইরের দেশ থেকে এসেছে।
তিনি বলেন, “হলি আর্টিজানের পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদেরকে নানা বিধি-নিষেধ দিয়েছে। অনেকে বলেছে বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। পৃথিবীর কোনো দেশ আমাদের তখন সহায়তা করেনি।
“কিন্তু দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা জঙ্গিবাদকে পরাজিত করেছি। জঙ্গিবাদ বার বার মাথা চাড়া দিয়ে উঠলে আমরা বার বার পরাজিত করব। কোনোক্রমেই দেশে জঙ্গিবাদের কার্যক্রম সফল হতে দেব না।”