এনু-রূপনের মুদ্রাপাচার মামলায় অভিযোগ গঠন ৪ নভেম্বর

রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানার মুদ্রাপাচার মামলায় ক্যাসিনোকাণ্ডের অন্যতম হোতা, আলোচিত দুই ভাই ও গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল হক এনু ও রূপন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আগামী ৪ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের দিন রাখা হয়েছে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2020, 12:37 PM
Updated : 24 Sept 2020, 12:37 PM

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ অভিযোগপত্র গ্রহণ করে অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য করেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস পাল এ তথ্য জানান।

এর আগে গত ২২ জুলাই ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সেখানে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে এক কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মমিলার নথি থেকে জানা যায়, এনু-রুপনের নামে ব্যাংকে ১৯ কোটি টাকা এবং পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ১২৮টি ফ্ল্যাটের খোঁজ মিলেছে। ক্যাসিনো ব্যবসার মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এ দুই ভাই।

২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এনামুল হক এনু ও রুপন ভূঁইয়াদের পুরান ঢাকার বানিয়ানগরের বাসায় এবং তাদের দুই কর্মচারীর বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। সেখান থেকে পাঁচ কোটি টাকা এবং সাড়ে সাত কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সূত্রাপুর ও গেণ্ডারিয়া থানায় তাদের নামে ছয়টি মামলা হয়।

পরে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এনু-রুপনের লালমোহন সাহা স্ট্রিটের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। ওই বাড়ি থেকে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়। একইসঙ্গে পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজ এবং এক কেজি সোনা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় দুই ভাইয়ের নামে আরও দুটি মামলা হয়।

অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনও এনু-রুপনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করে। মামলায় এনুর বিরুদ্ধে ২১ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং রুপনের বিরুদ্ধে ১৪ কোটি ১২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৮২ টাকার আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। তবে দুদক এখনও এ বিষয়ে আদালতে কোনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, এনু-রুপনের আয়ের বড় উৎস ছিল মতিঝিলের ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসা।

স্থানীয় লোকজন ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, কয়েক বছর ধরে ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসার মাধ্যমে রাতারাতি টাকার কুমির বনে যান দুই ভাই। নগদ টাকায় পুরোনো বাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমি কেনা তাদের নেশায় পরিণত হয়।

সিআইডির তদন্তে ১২৮টি ফ্ল্যাট, ছয়টি গাড়ি ও কয়েক বিঘা জমির খোঁজ মিলেছে। সিআইডি তদন্ত করে দেখেছে, বাসায় নগদ টাকা ও স্বর্ণ রাখার পাশাপাশি ব্যাংকেও বিপুল পরিমাণ টাকা জমা রাখেন এনু ও রুপন ভূঁইয়া।

সিআইডির তদন্ত অনুযায়ী, তাদের ব্যাংক হিসাবে জমা রয়েছে ১৯ কোটি ১১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৪ টাকা। আদালতের আদেশে এসব টাকা এখন জব্দ রয়েছে।

পুরান ঢাকার বংশাল, ইংলিশ রোড, নয়াবাজার, মতিঝিল, শান্তিনগর, গুলশান, ধোলাইখাল, নবাবপুর এলাকায় সাতটি বেসরকারি ব্যাংকে এসব টাকা জমা রাখেন ক্যাসিনো কারবারি এই দুই ভাই।

গত ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জের একটি ভবন থেকে এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয় এনু ও রুপনকে।