তেজগাঁওয়ের ওই হাসপাতালের আরও তিন চিকিৎসক আক্রান্ত

নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত এক চিকিৎসক ঢাকার তেজগাঁওয়ের যে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্ব এড়ানোর অভিযোগ করেছিলেন, সেই হাসপাতালের আরও তিন চিকিৎসক ও দুজন নার্সও এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

কাজী মোবারক হোসেন নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 April 2020, 06:54 PM
Updated : 14 April 2020, 07:04 PM

তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার রাতে এই তথ্য জানিয়ে হাসপাতালের সার্জারি ও গাইনি বিভাগের ৪০ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো এবং বিভাগ দুটি বন্ধ রাখার কথা বলেছে।

রাজধানীর একটি সরকারি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ওই নারী চিকিৎসক দুপুরে অভিযোগ করেন, হাসপাতালে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পেয়ে তারা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারা বিষয়টি পাত্তা না দেওয়ায় কোনো ধরনের সুরক্ষা সরঞ্জাম ছাড়াই তাদের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়।

গত ৮ এপ্রিল সর্বশেষ ডিউটি করে যাওয়ার পর তার জ্বর ও কাশি শুরু হয়। ১০ এপ্রিল হাসপাতালে ডিউটি থাকলেও তিনি আর আসতে পারেননি। এরমধ্যে তিনিসহ ১২ জন চিকিৎসক-নার্স নভেল করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করান, যেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের সহযোগিতা করেনি।

১২ এপ্রিল তার করোনাভাইরাস ধরা পড়লে হাসপাতালের প্রশাসন থেকে ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়া হয়, গাইনি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ওই চিকিৎসক তার স্বামীর কাছ থেকে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করার পর দুপুরে ইমপালস হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার ডা. খাদিজা জুমার কাছে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের ইমপালস হাসপাতালে একজনও করোনাভাইরাসের রোগী আসেনি। তাহলে কীভাবে তিনি হাসপাতাল থেকে আক্রান্ত হয়েছেন, বলেন?”

এ নিয়ে বিকালে ‘দায়িত্ব নিচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ: কোভিড-১৯ আক্রান্ত চিকিৎসক’ শিরোনামে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

পরে রাতে ডা. খাদিজা জুমাই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তাদের আরও তিন চিকিৎসক ও দুই নার্স করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়া এবং সে প্রেক্ষিতে তাদের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান।

খাদিজা জুমা বলেন, “আমাদের চারজন ডাক্তার ও নার্স আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরে আমরা গাইনি ও সার্জারি বিভাগ বন্ধ করে দিয়েছি। আর এই দুই বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৪০ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।”

তাহলে বিকালে ওই চিকিৎসকের অভিযোগ নিয়ে ওই বক্তব্য কেন দিয়েছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বিষয়টি আমরা এখনও ক্লিয়ার না। আসলে কোথা থেকে কীভাবে এতজনের মধ্যে ছড়িয়েছে। আর ওই ডাক্তারের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি।”

করোনাভাইরাস আক্রান্ত ওই চিকিৎসকের স্বামী একজন সরকারি কর্মকর্তা।তিনি সুস্থ আছেন এবং তার করোনাভাইরাস পরীক্ষায় ‘নেগেটিভ’ এসেছে।