চোরাচালান রোধে বিজিবিকে তৎপর থাকতে নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

সীমান্তে চোরাচালান রোধে বিজিবি সদস্যদের সচেষ্ট থাকার পাশাপাশি লোভ-লালসার উর্ধ্বে থেকে নির্মোহভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2020, 01:02 PM
Updated : 24 Feb 2020, 01:02 PM

পাশাপাশি সীমান্ত রক্ষীদের চরিত্রে কঠোরতার পাশাপাশি মানবিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার চট্টগ্রামে বিজিবির ৯৪তম রিক্রুট ব্যাচের শপথ গ্রহণ ও প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান প্রধান অতিথি ছিলেন  রাষ্ট্রপতি।

অনুষ্ঠানে ভাষণে ১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর এ বাহিনীর তৃতীয় রিক্রুট ব্যাচ সমাপনী কুচকাওয়াজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া বক্তৃতা স্মরণ করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “আজ আপনাদের কাছে আমি অনেক বড় কর্তব্য দিয়েছি, অনেক বড় কাজ দিয়েছি। এ কাজ হলো চোরাচালান বন্ধ করা। তোমাদের কাছে আমার হুকুম, স্মাগলিং বন্ধ করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, তোমরা পারবা। এ বিশ্বাস তোমাদের উপর আমার আছে।”

আবদুল হামিদ বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূল্যবান এ বক্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সীমান্তে চোরাচালান রোধে আপনারা সর্বদা সচেষ্ট থাকবেন। এ জন্য বিজিবির প্রতিটি সদস্যকে বিভিন্ন প্রতিকূলতার মাঝেও দৃঢ় মনোবল, নির্লোভ ও নির্ভিক থাকতে হবে।

“আমি আশা করি, আজ তোমরা যারা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-এর পরিবারভুক্ত হলে, তোমাদের চরিত্রে কঠোরতার পাশাপাশি মানবিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটাতে হবে।”

সব প্রকার লোভ-লালসার উর্ধ্বে থেকে নিজেদের উপর অর্পিত দায়িত্ব নির্মোহভাবে পালনে বিজিবি সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান রাষ্ট্রপ্রধান।

বিজিবির নতুন সদস্যদের প্রতি এই বাহিনীর সীমান্তে পাহারার সুনাম বৃদ্ধির লক্ষে সততা, নিষ্ঠা, কর্মদক্ষতার পাশাপাশি সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব প্রদর্শনের মাধ্যমে অক্লান্তভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।

অন্যান্য বাহিনীর নারী সদস্যদের অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বিজিবি’র নারী সদস্যদেরও প্রশংসা করে বলেন, “তারা কর্মক্ষেত্রে কাজের মাধ্যমে তাদের যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতা প্রমাণ করে নিজেদের শপথ রক্ষা করতে পারবেন।”

রাষ্ট্রপতি বলেন, “বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের রয়েছে দু’শত বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকেই দেশমাতৃকার সেবায় এই বাহিনীর সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছে। ”

তিনি আরও বলেন, “বিজিবি সদস্যরা দেশের অভ্যন্তরে যে কোনো দুর্যোগময় মুহূর্তে জনগণের সেবায় তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং সাধারণ মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে।”

সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. শাফিনুল ইসলাম তাকে অভ্যর্থনা জানান।

এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে বীরউত্তম মুজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে একটি আকর্ষণীয় কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়।

রাষ্ট্রপতি ছাদখোলা জিপে দাঁড়িয়ে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন।

এ সময় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছিলেন বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল শাফিনুল ইসলাম এবং বিজিটিসি’র কমান্ড্যান্ট ও সি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওমর জাহিদ।

৯৪তম ব্যাচে ২৪ সপ্তাহের প্রশিক্ষণ শেষে ৪৯ নারীসহ মোট ৫৪৪ জন নতুন সদস্য বাহিনীতে রিক্রুট হয়েছে। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এই ব্যাচ শুরু হয়।

রাষ্ট্রপতি পরে বিজিবির সেরা শিক্ষানবিশদের হাতে পদক তুলে দেন। তিনি একটি কেক কাটেন এবং অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে ফটো সেশনে অংশ নেন।

জাতীয় সংসদ সদস্য, সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিব, কূটনীতিকবৃন্দ এবং সামরিক ও বেসামরিক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।