প্রতিপক্ষ দুর্বল ছিল বলে ভোট শান্তিপূর্ণ: সুজন

ব্যাপক অনিয়মের পরেও ভয়ের সংস্কৃতি ও প্রতিপক্ষের চরম দুর্বলতার কারণে ঢাকার দুই সিটির ভোট আপাত দৃষ্টিতে শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে মনে করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2020, 10:28 AM
Updated : 24 Feb 2020, 11:34 AM

সদ্যসমাপ্ত এ নির্বাচনের মূল্যায়ন ও বিজয়ীদের তথ্য বিশ্লেষণ তুলে ধরতে সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এ মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদন তুলে সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, “একটি প্রচার আছে যে, এই নির্বাচন ছিল শান্তিপূর্ণ।আমরা মনে করি, এই শান্তি অশান্তির চেয়েও ভয়াবহ।

“ভয়ের সংস্কৃতির কারণে কেউ যদি অন্যায়ের প্রতিবাদ করার সাহস না পায়, তবে সেই অন্যায়ের প্রতিকার পাওয়া দুষ্কর। ব্যাপক অনিয়ম হওয়ার পরেও যদি সেই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়, তবে বুঝতে হবে প্রতিপক্ষ এখানে চরম দুর্বল।”

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান ছিল দুর্বল এবং নানা অনিয়ম হলেও বিএনপিকে প্রতিবাদী হতে দেখা যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটারদের আস্থা ফেরাতে ভোটে হওয়া সব অনিয়মের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ এনে তিনি বলেন, “যে অনেকগুলো অভিযোগ এসেছে, এগুলোর তদন্ত হওয়া দরকার। এগুলোর তদন্ত হলেই আমরা যা ঘটেছে সত্যিকারভাবে সেটা বের হয়ে আসবে। যার মাধ্যমে এই নির্বাচন কমিশনকে পরিশীলিত করতে পারব, নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা ফিরে আসবে।

“এ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন ও ইভিএমের এক অগ্নিপরীক্ষা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই অগ্নিপরীক্ষা তারা উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তারা ব্যর্থ হয়েছেন।”

একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়ার বহুল আলোচিত অভিযোগ নিয়ে সুজন বলছে, এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

সিটি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম থাকার কারণ হিসেবে সুজন বলছে, নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর ভোটারদের আস্থা না থাকাই হল প্রধান কারণ।

এজন্য ইভিএমের ওপর আস্থা না থাকা, দলগুলোর পাল্টাপাল্টি হুমকির ভোটারদের কেন্দ্রবিমুখ হওয়া, পাড়া-মহল্লা ও ভোটকেন্দ্র পাহারা এবং ভোটকেন্দ্রের বাইরে সরকারদলীয় কর্মী-সমর্থকদের জটলা ও মহড়া, আঙুলের ছাপ না মেলায় কিছু কিছু ভোটার ভোট না দিয়েই ফিরে যাওয়া, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়ার বিষয়টি প্রচার হওয়া, ভোটকেন্দ্রে না গেলেও তাদের ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক প্রার্থীরা জয়ী হবে এমন ধারণায় বদ্ধমূল থাকা, প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের মধ্যে শঙ্কা ও আত্মবিশ্বাসহীনতাকে কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়।

ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন কেমন হয়েছে, তা জানতে চেয়ে ফেইসবুক পেইজে একটি অনলাইন জরিপ করেছে সুজন। এতে ৪ হাজার ৩০০ জন অংশ নেন।

দিলীপ বলেন, “যারা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, তাদের ৯৪ শতাংশই বলেছেন যে, নির্বাচনগুলো অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়নি। যদিও অনলাইন ভোট বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নয়, এটি জনসাধারণের ধারণার অনেকটা ইঙ্গিত বহন করে।”

নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রগুলোতে উপস্থিতির চিত্র ও ভোট পড়ার হারের মধ্যে সামঞ্জস্য নেই বলে মনে করে সুজন।