হুদার মামলায় বিচারপতি সিনহা খালাস

সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদার  করা সেই ঘুষের মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার  সিনহা।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2020, 07:12 PM
Updated : 16 Feb 2020, 07:12 PM

হুদার অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে গত ৪ ডিসেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন।

সেই প্রতিবেদন পেয়ে ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে আদেশ দেন।

এদিকে চার কোটি টাকা স্থানান্তর ও আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মুদ্রা পাচারের আরেক মামলায় বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের পর বিচার শুরুর প্রক্রিয়া চলছে। 

দুদকের আদালত পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে দুটি মামলা ছিল। যার মধ্যে নাজমুল হুদার মামলায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন।

“চার কোটি টাকা স্থানান্তর ও আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা অপর মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের পর বিচার শুরুর প্রক্রিয়া চলছে।”

প্রধান বিচারপতি সিনহা তিন বছর আগে নানা নাটকীয় ঘটনার মধ্যে বিদেশে পাড়ি জমানোর পর যখন তার বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতির অভিযোগের তদন্তে নেমেছিল দুদক, তখনই ঘুষের মামলাটি করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাজমুল হুদা।

২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর শাহবাগ থানায় মামলাটি হলে পুলিশ ৩ অক্টোবর মামলাটি দুদকে পাঠিয়ে দেয়।

এদিকে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে দুদক আইনের ২৮(গ) (২) ধারায় মামলা করতে কমিশন ইতোমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য ও খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী নাজমুল হুদা ওই দল ছেড়ে নতুন দল গড়ে এখন আওয়ামী লীগের জোটে ভেড়ার আশায় আছেন।

বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে মামলা করার পর নাজমুল হুদা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ২০১৭ সালে তার কাছে সোয়া তিন কোটি টাকা ঘুষ দাবি করেন বিচারপতি এস কে সিনহা।

“সে সময় তিনি আমাকে বলেছিলেন, টাকা না দিলে আমার বিরুদ্ধে করা সবকটি মামলার রায় বিরুদ্ধে যাবে। ঘটনার তারিখ ছিল ২০ জুলাই। ওই দিন দুপুরে প্রধান বিচারপতি তার খাস কামরায় ডেকে ঘুষ দাবি করেন।”

সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘খবরের অন্তরালে’র জন্য মীর জাহের হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে এক মামলায় নাজমুল হুদার ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। জরুরি অবস্থার সময় দেওয়া ওই মামলার রায়ে হুদার স্ত্রী সিগমা হুদারও তিন বছর কারাদণ্ড হয়েছিল।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদা ও সিগমা হুদা আপিল করলে ২০১১ সালের ২০ মার্চ হাই কোর্ট তাদের খালাস দেয়। কিন্তু দুদকের আপিলে আপিল বিভাগ ওই রায় বাতিল করে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেয়। তখন আপিল বিভাগে ছিলেন বিচারপতি সিনহা।

মামলার পুনঃশুনানি শেষে হাই কোর্টের আরেকটি বেঞ্চ নাজমুল হুদাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয়।