নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্বামীর ঠিকানা ব্যবহারের শর্ত কেন অবৈধ নয়: হাই কোর্ট

বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বিবাহিত নারী প্রার্থীর স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে স্বামীর ঠিকানা ব্যবহারের শর্তকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2019, 10:06 AM
Updated : 31 Dec 2019, 10:24 AM

সেসঙ্গে ‘সহকারী পরিচালক (জেনারেল)’ পদে নিয়োগের ওই শর্ত মুছে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।

এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চ এ রুল জারি করে।

জনপ্রশাসন সচিব, বাণিজ্য সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, বাংলাদেশে ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

গত ১ ডিসেম্বর জারি করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তির ১৪ নম্বর পয়েন্টে বলা হয়েছে, “বিবাহিত মহিলা প্রার্থীদের ক্ষেত্রে স্বামীর স্থায়ী ঠিকানাকে প্রার্থীর স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করতে হবে।”

বিষয়টি নিয়ে নারী অধিকারকর্মীদের সমালোচনাসহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে জনস্বার্থে রিট আবেদন করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও নারীপক্ষ।

পরে আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী আইনুন্নাহার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বিবাহিত নারী প্রার্থীর বেলায় যুক্তিহীনভাবে স্বামীর ঠিকানাকে স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ করা বাধ্যবাধকতা সংবিধানের ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদকে লঙ্ঘন করেছে।

“কারণ সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করতে পারবে না।”

এ আইনজীবী বলেন, নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে সিডো সনদসহ যত ধরনের কনভেনশন আছে, বিজ্ঞপ্তির এই শর্ত সব তা লঙ্ঘন করেছে। তাছাড়া লিঙ্গসমতায় সরকারের উদ্যোগেরও বিরোধী বিজ্ঞপ্তির এই শর্ত।

“তাই নারীর প্রতি লিঙ্গ বৈষম্যসহ কোনো ধরনের বৈষম্য যাতে সৃষ্টি না করে, আলোচনার মাধ্যমে তা বাতিল করে নতুন সে ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করার নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদনটি করা হয়েছি। আদালত রুল জারি করেছে।”

রুলে বিজ্ঞপ্তির ১৪ নম্বর শর্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত হবে না তা জানতে চাওয়ায়ার পাশাপাশি ওই শর্ত মুছে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি দিতে বিবাদিদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়।

এছাড়া লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে অবিলম্বে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়নসহ এবিষয়ে ব্যাংককর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছে আদালত।