শোকজ ছাড়া সরকারি চাকুরেদের সাময়িক বরখাস্ত কেন অবৈধ নয়: হাই কোর্ট

সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিভাগীয় তদন্তের ক্ষেত্রে কারণ দর্শানোর সুযোগ না দিয়ে সাময়িক বরখাস্ত করার বিধানকে কেন সংবিধানপরিপন্থী ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2019, 11:48 AM
Updated : 15 Dec 2019, 11:48 AM

সরকারি চাকরি আইনের ৩৯(১) ধারা বাতিল চেয়ে করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এ রুল জারি করে।

আইন সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, এনবিআর সদস্য (প্রশাসন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ), রংপুর কর অঞ্চলের কমিশনার ও একই জোনের সহকারী কমিশনারকে (প্রশাসন) চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন খুরশীদ আলম খান ও রাজু মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

পঞ্চগড়ে থাকার সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উচ্চমান সহকারী (কুড়িগ্রাম সার্কেল) মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠায় বিভাগীয় তদন্তের স্বার্থে গত ১৫ মে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের ৩৯(১) ধারা মোতাবেক দেওয়া সাময়িক বরখাস্তের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে তিনি রিট আবেদনটি করেন।

তার পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইনের এই ধারার মধ্য দিয়ে সাধারণ সরকারি কর্মচারিদের শোকজ পাওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে ক্ষমতা দিয়ে তাদের প্রশাসনিক এখতিয়ার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ যা বলবে তাই হবে; বিভাগীয় কার্যধারায় অভিযোগ রুজু করা হবে কোনো রকম শোকজ ছাড়াই।

“কাজেই আমরা মনে করি, একজন সরকারি কর্মচারীর জানার অধিকার আছে তার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ। এটা তার মৌলিক অধিকার। সেখান থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ফলে ধারাটি চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।”

তিনি বলেন, আদালত শুনানি শেষে সরকারি চাকরি আইনের ৩৯(১) ধারাকে কেন অবৈধ, সংবিধানপরিপন্থী ঘোষণা এবং বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে।

সরকারি চাকরি আইনের ৩৯(১) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের প্রস্তাব বা বিভাগীয় কার্যধারা রুজু করা হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অভিযোগের মাত্রা ও প্রকৃতি, অভিযুক্ত কর্মচারীকে তাহার দায়িত্ব হইতে বিরত রাখিবার আবশ্যকতা, তৎকর্তৃক তদন্তকার্যে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা, ইত্যাদি বিবেচনা করিয়া তাহাকে সাময়িক বরখাস্ত করিতে পারিবে:

তবে শর্ত থাকে যে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অধিকতর সমীচীন মনে করিলে, এইরূপ কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করিবার পরিবর্তে, লিখিত আদেশ দ্বারা, তাহার ছুটির প্রাপ্যতা সাপেক্ষে, উক্ত আদেশে উল্লিখিত তারিখ হইতে ছুটিতে গমনের নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।