তদবির করিনি, ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে অপপ্রচার: ভিপি নূর

তদবিরের অভিযোগ নাকচ করে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর বলেছেন, তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য মোবাইল কথোপকথনের খণ্ডিতাংশের অডিও প্রচার করা হচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2019, 03:53 PM
Updated : 5 Dec 2019, 03:53 PM

তথ্য-বিকৃত করে ব্যক্তিগত ফোনালাপ প্রচার করা ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে স্পষ্ট অপরাধ’ উল্লেখ করে তিনটি গণমাধ্যমকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নূর।

দুর্নীতির অভিযোগ এনে নূরকে বহিষ্কারের দাবিতে বৃহস্পতিবার ডাকসু ভবনের সামনে মানববন্ধন করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠন। ডাকসু ভবনে গিয়ে নূরের কক্ষে তালাও লাগিয়ে দেন তারা। পরে বিষয়টি নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করেন ডাকসুর ভিপি।

নূর বলেন, “কোনো প্রকল্প কর্মকর্তার সাথে কোনো কথা বলা কিংবা কোনো তদবির করিনি।...এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। আমাকে ও আমার সংগঠন তারুণ্যের স্পন্দন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদকে বিতর্কিত করে তুলে ধরতেই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এমন হীন চক্রান্তের আয়োজন করা হয়েছে।”

ডাকসু ভিপি বলেন, মঙ্গলবার নিউজ টোয়েন্টিফোর ও ডিবিসি চ্যানেলে তার কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপের খণ্ডিতাংশ ‘বিকৃতভাবে’ প্রচার করে ‘ভুল ব্যাখ্যা’ দেওয়া হয়েছে।

“যা আমার সম্মানহানি ও জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। অডিওটির প্রথম অংশের কথোপকথন ছিল আমার খালা ও আমার পরিচিত এক ভাইয়ের সাথে। যেখানে আমার খালার কনস্ট্রাকশান ফার্মের ১৩ কোটি টাকার একটি কাজের ব্যাংক গ্যারান্টি নিয়ে ভাইয়ের সাথে আলোচনা করেছিলাম। যা একান্তই ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়।”

তিনি বলেন, “কিন্তু নিউজ টোয়েন্টিফোর ও ডিবিসি চ্যানেলে কথোপকথনটির বিভিন্ন খণ্ডিতাংশ বিকৃতভাবে প্রচার করে এবং আমি জনৈক প্রকল্প কর্মকর্তার কাছে ১৩ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজের তদবির করি, এই মর্মে খবর প্রচার করে। একইভাবে বাংলাদেশ প্রতিদিন অনলাইনেও একই সংবাদ প্রকাশ করে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, সেখানে আমি কোনো প্রকল্প কর্মকর্তার সাথে কোনো কথা বলা কিংবা কোনো তদবির করিনি।

“অডিও ক্লিপটির দ্বিতীয় অংশে অন্য ব্যক্তির সাথে কথোপকথন নিয়ে নিউজ টোয়েন্টিফোর ও বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ বলা হয়েছে আমি প্রবাসী কোন এক ব্যক্তির কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছি এবং ডিবিসি চ্যানেলে প্রচার করা হয়েছে, টেক্সাস প্রবাসী বিএনপি নেতার কাছে আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছি। কিন্তু প্রকৃত ঘটনাটি ছিল, জনৈক প্রবাসী ব্যক্তি ফোন করে আমাকে সহযোগিতার কথা বললেও আমি তা নাকচ করে দেই।”

পুরো ফোনালাপটি শুনলে তার কথার সত্যতা পাওয়া যাবে বলে দাবি করেন নূর।

তিনি বলে, “কিন্তু খুবই আশ্চর্যের বিষয়, উক্ত ঘটনা নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করার ক্ষেত্রে ঘটনার সত্যতা যাচাই না করে, আমার কোনো বক্তব্য না নিয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং 'বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ ' এর ইমেজ ক্ষুণ্ন করার জন্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তথ্য বিকৃত করে এমন সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে।

নুরুল হক নূর বলেন, ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করে গণমাধ্যমে প্রচার সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় আইন বিরোধী। তাছাড়া এভাবে ‘তথ্য বিকৃত করে’ সংবাদ পরিবেশন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ‘স্পষ্ট অপরাধ’।

“তাই তথ্য-বিকৃত করে ভুল সংবাদ পরিবেশেন করায় নিউজ টোয়েন্টিফোর, ডিবিসি ও বাংলাদেশ প্রতিদিন কর্তৃপক্ষকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সাথে দায়িত্বশীল গণমাধ্যম হিসেবে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে খবর প্রচার ও প্রকাশের আহ্বান জানাই। তা না হলে তিনটি গণমাধ্যম ছাত্রসমাজ বর্জনসহ আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।”

ডাকসুর ভিপির কক্ষে তালা লাগানো ও পদত্যাগ দাবি নিয়েও সমালোচনা করেন নূর।

তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের একটি সংগঠন আমার পদত্যাগ দাবি করে, কক্ষে তালা লাগায়। যার আহ্বায়ক আওয়ামীপন্থী নীল দলের বিতর্কিত শিক্ষক নেতা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন। একই সাথে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান জয়ও একই দাবি করেন।

“ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে আমি মনে করি যে, এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। আমাকে ও আমার সংগঠন তারুণ্যের স্পন্দন 'বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ'কে বিতর্কিত করে তুলে ধরতেই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এমন হীন চক্রান্তের আয়োজন করা হয়েছে।”