আবরার হত্যার বিচার হবে দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে: আইনমন্ত্রী

বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার বিচার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2019, 11:12 AM
Updated : 13 Nov 2019, 11:12 AM

আলোচিত এই মামলায় পুলিশ অভিযোগপত্র দেওয়ার পর বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।

আবরার হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে দ্রুত বিচারের দাবি উঠেছিল।

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যে কোনো মামলা ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা না গেলে আরও ৪৫ দিন সময় নিতে পারে আদালত।

আবরার হত্যাকাণ্ডের ৫ সপ্তাহের মধ্যে বুয়েটেরই ২৫ ছাত্রকে আসামি করে বুধবার আদালতে অভিযোগপত্র দেয় মামলাটির তদন্ত সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশ।

এখন বিচার শুরুর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মামলাটি দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের আবেদন আসতে হবে।

দ্রুত এই বিচার শুরুর আশা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও।

আইনমন্ত্রী বলেন, “এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আবেদন আসতে হয়, আবেদন আসলে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ মামলা (নিষ্পত্তি) করার জন্য আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে এবং দ্রুততার সাথে করার জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ বিচারকার্য করব।”

বিচার শেষ হতে কত সময় লাগতে পারে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করা হলে এ বিচার প্রথম সময় হচ্ছে ৯০ দিন, এর পরে হচ্ছে ৩০ দিন, সর্বমোট ১২০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন না করতে  না পারলে পরে আরও ১৫ দিনের সময় আছে অর্থাৎ ১৩৫ দিনের মধ্যে বিচার সম্পন্ন করতে হবে।”

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যার বিচার দ্রুত শেষ করার বিষয়টি দেখিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, “জনগণ চেয়েছে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত করার জন্য, সেটাও সম্পন্ন করা হয়েছে, এরকম অনেক বলা যাবে। এখন দায়িত্ব বর্তেছে আবরার হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত শেষ করতে হবে।”

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের আসামিরা

মামলাটি পরিচালনায় আগামী সোমবার থেকে ‘প্রসিকিউশন টিম’কাজ শুরু করছে বলেও জানান অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।

অভিযোগপত্র হওয়ার পর আইনি প্রক্রিয়া জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, “এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পরপরই বলেছিলাম, তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র পাওয়ার পরে এবং সেটা যখন বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হবে, তারপর থেকে দায়িত্ব হবে প্রসিকিউশন টিমের।

“আমি বলেছিলাম, একটা প্রসিকিউশন টিম রেডি রাখব, মামলা বিচারিক আদালতে পৌছালে কার্যক্রম শুরু করতে পারে, সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে।”

হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের পর পলাতক আসামিদের হাজির হতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, হাজির না হলে তাদের অনুপস্থিতিতে বিচার শুরুর জন্য গেজেট নোটিফিকেশনসহ কিছু প্রক্রিয়ার কথা বলেন আনিসুল হক।

“ফর্মালিটিজগুলো যথাশিগগিরই শেষ করব। আইনে কিন্তু বলা আছে, একটা সময় দিতে হবে। সেই সময়ের উপর দিয়ে যেতে পারব না, আইনি বাধ্যবাধকতা মেনেই যত দ্রুত করা যায়, তা হবে।”

আবরার হত্যাকাণ্ডের আসামিদের প্রায় সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, ২৫ আসামির মধ্যে ১১ জন আবরারকে হত্যায় সরাসরি অংশ নেন। আর সেখানে উপস্থিতি এবং অন্যভাবে সম্পৃক্ততার কারণে বাকি ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।