কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই: আইনমন্ত্রী

উচ্চ আদালতের কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ সরকারের আইন ও বিচার বিভাগে নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2019, 04:36 PM
Updated : 7 Nov 2019, 04:36 PM

বৃহস্পতিবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী একথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হয়। 

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের প্রশ্ন ছিল, “হাই কোর্ট বিভাগের কয়েকজন বিচারপতির অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে। এই তদন্ত কোন আইনে হচ্ছে?”

জবাবে আনিসুল হক বলেন, “হাই কোর্টের কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আইন ও বিচার বিভাগে পাওয়া যায়নি।”

অগাস্ট মাসে ‘অসদাচরণের’ অভিযোগে হাই কোর্টের তিন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর সিদ্ধান্ত হওয়ার পর তাদের বিচারকাজ থেকে সাময়িকভাবে বিরত থাকতে বলা হয়।

উচ্চ আদালতের ওই তিন বিচারক হলেন বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক এবং বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ।

তিন বিচারকের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ রয়েছে- তা স্পষ্ট করেনি সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ।

তবে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম ওই সময় বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের ‘ভাবমূর্তি ঠিক’ রাখার জন্য, বিচার বিভাগকে ‘কলুষমুক্ত’ রাখার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি ছিল আইনজীবীদের দীর্ঘদিনের দাবি।

মোশাররফ হোসেনের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ–দ্রুত বিচার আইনে ৩ হাজার ১০৩টি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে ঢাকায় বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ১ হাজার ৯৮৯টি। 

এদিকে মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ নিয়ে ভারত–বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন বেশ কিছু বৈঠক করেছে। বাংলাদেশ কয়েকটি পত্র ও নোট ভারবালের মাধ্যমে নিজেদের উদ্বেগের কথা ভারতকে জানিয়েছে। ২০১২–১৩ অর্থবছর হতে যৌথ নদী কমিশনের অধীনস্ত  সাবগ্রুপের মাধ্যমে সমীক্ষা পরিচালনা করা হচ্ছে। সাবগ্রুপের তৃতীয় বৈঠকে প্রকল্পের আঙ্গিক পরিবর্তন হবে বলে জানানো হয়েছে এবং পরিবর্তিত তথ্য বাংলাদেশকে সরবরাহ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। সাবগ্রুপের সমীক্ষা কাজ ২০২১ সালে শেষ হওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সময় দুই দেশের যৌথ ইশতেহারে বলা হয়েছে, টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে ভারত এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না, যা বাংলাদেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, বর্তমান সরকারের দুই মেয়াদে এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ২৮ হাজার ৪৬ জন কর্মকর্তা–কর্মচারীকে সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছে।

ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, নদ–নদীর নাব্যতা ও পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে পানি উন্নয়ন বোর্ড গত ১০ বছরে ১ হাজার ৩৬৭ কিলোমিটার নদীপথ পুনঃখনন করা হয়েছে।

মোশাররফ হোসেনের প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, ২০১৮–১৯ অর্থবছরে ঢাকা চিড়িয়াখানার পশু–পাখির খাবার কেনার জন্য বরাদ্দ ছিল ৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে  ব্যয় হয়েছে ৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ আছে ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

২০১৮–১৯ অর্থবছরে পশু পাখি কেনার জন্য বরাদ্দ ছিল ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে চারটি বাঘ, দুটি চিতা বাঘ, দুটি ইমপালা, ১০টি উটপাখি এবং ছয়টি হনুমান কেনা হয়েছে।

সহিদুজ্জামানের প্রশ্নের জবাবে আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, দেশে মাছের চাহিদা মাথাপিছু ৬০ গ্রাম। এর বিপরীতে মাছ গ্রহণের পরিমাণ ৬২ দশমিক ৫৮ গ্রাম। ২০১৭–১৮ অর্থবছরে মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন। এর  বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ৪২ লাখ ৭৭ হাজার টন।