কাউন্সিলর মিজান-রাজীবের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশেনের দুই কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব ও হাবিবুর রহমান মিজানের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2019, 12:46 PM
Updated : 6 Nov 2019, 12:46 PM

বুধবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলা দুটি দায়ের হয় বলে কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।

ঢাকা উত্তরের ৩৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাজীবের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা করেন।

মামলায় রাজীবের আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ২৬ কোটি ১৬ লাখ ৩৬ হাজার টাকার সম্পদ পাওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

অন্যদিকে ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন কমিশনের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান।

মামলায় মিজানের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি ১৬ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩১ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন অভিযোগ আনা হয়েছে।

যুবলীগ নেতা রাজীব এবং আওয়ামী লীগ নেতা মিজান দুজনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান অভিযানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।

রাজীবের সম্পদ

রাজীবের বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে বলা হয়, তার অবৈধ সম্পত্তির মধ্যে ঢাকার মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির ১ নম্বর রোডের ৩৩ নম্বর প্লটে একটি দুই তলা ডুপ্লেক্স বাড়ি রয়েছে। মোহাম্মপুরের কাটাসুর ৩ নং রোডে রাজীবের একটি প্লট রয়েছে।

এছাড়া মোহাম্মদপুরে মোহাম্মদীয়া হাউজিং লিমিটেডের পাঁচতলা ও চারতলা দুটি বাড়ি, একই এলাকার চান মিয়া হাউজিং লিমিটেডে তিনতলা বাড়ি, সাত মসজিদ হাউজিংয়ে ১৮ নম্বর বাড়িটি (ছায়াবিথি) চারতলা বাড়ির মালিক ইয়াছিন হাওলাদার, যিনি রাজীব এর চাচা।

রাজীব অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ এসব বাড়িতে বিনিয়োগ করেছেন বলে মামলায় বলা হয়ভ

সিলিকন হাউজিংয়ের শেয়ার হোল্ডার এবং শ্যামলাপুর ওয়ের্ষ্টার্ণ সিটি লিমিটেডের পরিচালক রাজীবের নামে মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির ৬ নম্বর সড়কে ছয় কাঠা জমি রয়েছে।

এজাহারে বলা হয়, রাজীবের চাচা ইয়াছিন হাওলাদার রাজমিস্ত্রি ছিলেন এবং এর বাইরে তার আয়ের কোনো উৎস ছিল না, যদিও তিনি বর্তমানে নিজেকে ঠিকাদার হিসেবে পরিচয় দেন।

এজাহারে বলা হয়, তারিকুজ্জামান রাজীব নিজের নামে-বেনামে এবং তার চাচা ইয়াছিন হাওলাদার ও অন্যের নামে ১১ কোটি ৯০ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জন করে নিজ দখলে রেখে ভাড়াসহ অন্যান্য সুবিধা গ্রহণ করছেন। এ সমস্ত সম্পদ তার আয়কর নথিতে উল্লেখ করেননি এবং আয়ের কোনো বৈধ উৎস নেই।

মিজানের সম্পদ

হাবিবুর রহমান মিজানের সম্পত্তির বিষয়ে মামলায় বলা হয়, তিনি মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বসিলার ৩০ কাঠা জমি দখল করে মার্কেট গড়েছেন। ওই মার্কেটের আশপাশে ৪৮২ কাঠা জমি দখল ২০টি টিনের দোকান করে ভাড়া তুলছেন।

এজাহারে বলা হয়, এছাড়া মিজান লালমাটিয়া বি ব্লকে সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল করে ‘স্বপ্নপুরী হাউজিং’ গড়ে তোলেন। একই হাউজিং এলাকায় আরেক জায়গায় ১০ কাঠা জমিতে ‘পপুলার অর্কিড’ নামে ছয় তলা ভবন, পাশে আরেকটি ১০ কাঠা জমিতে ‘ইমপেরিয়াল গার্ডেন’ নামে ছয় তলা ভবন, আরেকটি ১০ কাঠা জমিতে দুই ইউনিট বিশিষ্ট ছয় তলা ভবন নির্মাণ করেছেন।

অন্যদিকে ‘স্বপ্নপুরী হাউজিং কমপ্লেক্সে’ এর দুই হাজার গজ দূরত্বে ‘আড়ং মার্ট’ নামে ১৫ কাঠার জমিতে নির্মাণাধীন সাততলা ভবনের মালিক মিজান বলে এহাজারে বলা হয়।

এসব ভবনে নির্মাণে তিনি ১৯ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।