ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন হবে কিনা, আদেশ ৩ নভেম্বর

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন হবে কিনা, তা জানা যাবে আগামী ৩ নভেম্বর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2019, 10:39 AM
Updated : 16 Oct 2019, 10:39 AM

সাময়িক বরখাস্ত এ পুলিশ কর্মকর্তার জামিনের জন্য করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ তারিখ ঠিক করে দেয়।

মোয়াজ্জেম হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার, রানা কাওসার ও শাহীন হাওলাদার।

মামলার বাদী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনও শুনানিতে অংশ নেন।

এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারোয়ার হোসেন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শাহানা পারভীন।

আইনজীবী রানা কাউসার পরে বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন চেয়ে করা আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। আদালত আগামী ৩ নভেম্বর অদেশের জন্য রেখেছেন। ওইদিন জানা যাবে তিনি জামিন পাবেন কি না।”

ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গত ১৭ জুলাই সোনাগাজীর সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়।

এর বিরুদ্ধে ৩১ জুলাই হাই কোর্টে আপিল করে জামিন চান তিনি। এরপর ২৭ অগাস্ট হাই কোর্ট ওসি মোয়াজ্জেমের করা আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে ১৩ অক্টোবর শুনানির জন্য রাখে। সে ধারাবাহিকতায় বুধবার এ বিষয়ে শুনানি শেষ হয়।

এর আগে গত ৯ জুলাই ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছিল বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ।

নুসরাত গত মার্চ মাসে তার মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ করলে সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম তাকে থানায় ডেকে জবানবন্দি নিয়েছিলেন।

তার কয়েক দিনের মাথায় মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে নুসরাতের গায়ে অগ্নিসংযোগ করা হলে ওসির বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সারাদেশে আলোচনার মধ্যে নুসরাতের সেই জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

অগ্নিদগ্ধ নুসরাতের মৃত্যুর পর গত ১৫ এপ্রিল ওই ভিডিও ছড়ানোর জন্য ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে ঢাকায় বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন আইনজীবী সৈযয়দ সায়েদুল হক সুমন।

তদন্ত করে পিবিআই জানায়, নুসরাতের জবানবন্দি ভিডিও করে ওসি মোয়াজ্জেম যে তা ছড়িয়ে দিয়েছেন, তদন্তে সেই প্রমাণ মিলেছে। 

এই মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে গত ১৬ জুন গোপনে হাই কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন ওসি মোয়াজ্জেম।

আদালত পরদিন অর্থাৎ ১৭ জুন আবেদনটি শুনানির জন্য রাখলেও ওই দিনই সুপ্রিম কোর্ট এলাকা থেকে ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ।

১৭ জুন সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে ওই দিন আদালত তার জমিন আবেদন খারিজ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। এরপর থেকে মোয়াজ্জেম হোসেন কারাগারে।

সাইবার ট্রাইব্যুনালের সে খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে গত ১ জুলাই অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবীরা।

সেই আবেদনটিতেই ২ জুলাই অনুমতি দেয় আদালত; পরে গত ৯ জুলাই উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিলে গত ৫ আগস্ট উচ্চ আদালতে আপিল করে জামিন চান তিনি।