দাবি পূরণ নিয়ে বুয়েট প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি, আন্দোলন অব্যাহত

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উপাচার্যের বৈঠকের পর বুয়েটে রাজনৈতিক সংগঠন নিষিদ্ধ, আবরার ফাহাদ হত্যার মামলার এজহারভুক্ত ১৯ জনকে সাময়িক বহিষ্কার, হলের সিট অবৈধভাবে দখল করে থাকাদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2019, 07:56 AM
Updated : 12 Oct 2019, 07:59 AM

তবে পাঁচ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। শনিবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে মিছিল-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের পর আন্দোলনের পঞ্চম দিনে শুক্রবার ১০ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসেছিলেন বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।

উপাচার্য অনেকগুলো দাবি মেনে নিলেও ১৪ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আন্দোলনকারীদের সমঝোতায় আনতে পারেননি। এরপর শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে।

শিক্ষার্থীদের অনমনীয় অবস্থানের মধ্যে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিজ্ঞপ্তিগুলো জারি করে, যাতে শিক্ষার্থীদের অনেক দাবি পূরণের বিষয় রয়েছে।

আবরারের পরিবারকে মামলা পরিচালনার আর্থিক সহযোগিতা এবং র‌্যাগের নামে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা জানানোর জন্য ওয়েব পোর্টাল তৈরির কথা জানানো হয়েছে বিবজ্ঞপ্তিতে।

বুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত পাঁচটি পৃথক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।

শুক্রবার উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকের পর পাঁচটি শর্ত দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা; শনিবারের বিক্ষোভ থেকেও একই দাবি জানাচ্ছেন তারা।

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে শনিবারও মিছিলে নামে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

পাঁচ শর্ত

>> আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাইকে এখনই সাময়িক বহিষ্কার করতে হবে। যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট হবে, তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে মর্মে বুয়েট প্রশাসন থেকে নোটিস জারি করতে হবে।

>> আবরার হত্যা মামলার সব খরচ বুয়েট প্রশাসন বহন করবে এবং তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকবে, সেটাও নোটিসে লেখা থাকবে।

>> বুয়েটে সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করে সকল হল থেকে অবৈধ ছাত্র উৎখাত করতে হবে। অবৈধভাবে হলের সিট দখলকারীদের উৎখাত করতে হবে। সাংগঠনিক ছাত্র সংগঠনগুলোর অফিস রুম সিলগালা করতে হবে। সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পর ভবিষ্যতে কেউ যদি এ রকম সাংগঠনিক কার্যক্রমে জড়িত হয় কিংবা কোনো রকম ছাত্র নির্যাতনে জড়িত হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নেবে- তা বিস্তারিত জানিয়ে নোটিস জারি করতে হবে। পরবর্তীতে এটি যে অর্ডিন্যান্সে অন্তর্ভুক্ত থাকবে, তা নোটিসে উল্লেখ থাকতে হবে। পাশাপাশি, এ ধরনের কার্যক্রম তদারকির জন্য একটি কমিটি করতে হবে এবং কমিটি গঠনের বিষয়টিও নোটিসে উল্লেখ করতে হবে।

>> বুয়েটে পূর্বে ঘটে যাওয়া সকল ছাত্র নির্যাতন, হয়রানি, র‌্যাগিংয়ের ঘটনা এবং ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা প্রকাশের জন্য বিআইআইএস অ্যাকাউন্টে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম থাকতে হবে। বিষয়টি মনিটরিংয়ের মাধ্যমে শাস্তি বিধানের জন্য একটি কমিটি থাকতে হবে। বিষয়টি নোটিসের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।

>> প্রত্যেক হলের সকল ফ্লোরের দুই পাশে সিসি ক্যামেরা যুক্ত করতে হবে এবং এই সিসিটিভি ফুটেজ সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে- এই মর্মে নোটিস আসতে হবে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, এগুলোর বাস্তবায়ন হলে তবেই তারা ক্যাম্পাসে ভর্তি পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে ধরে নেবেন।

তবে এই পাঁচটি শর্তের অধিকাংশই পূরণের কথা জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে রয়েছে।