দুর্যোগে হতাহতের সংখ্যা হাজার থেকে শূন্যে নামিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চরম দুর্যোগ বাড়ার মধ্যেই কার্যকর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় এসব ঘটনায় বাংলাদেশে হতাহতের সংখ্যা হাজার থেকে প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2019, 06:25 AM
Updated : 24 Sept 2019, 06:25 AM

সোমবার রাতে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জলবায়ু পরিবর্তনে করণীয় বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্বজুড়ে প্রায় দুশো কোটি মানুষের জীবন বিপন্ন করে তুলেছে। হোক সেটা বাংলাদেশ ও ভারতের বন্যা, কিংবা সাউথ আফ্রিকার ঘূর্ণিঝড় ইদাই, বা ক্যারিবিয়ান হারিকেন ডোরিয়ান- এসব দুর্যোগ আমাদের জীবনে বিপর্যয় ডেকে আনছে।

“বিশ্বব্যাপী চরম জলবায়ু দুর্যোগের সংখ্যা বাড়ছে। তবে দক্ষ পূর্ব-সতর্কতামূলক ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশে এসব দুর্যোগে হতাহতের সংখ্যা হাজার থেকে প্রায় শূন্যে নেমেছে।”

এর আগে সোমবারই জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচির সাফল্যের জন্য শেখ হাসিনাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ সম্মাননা দেয় গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাক্সিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)।

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আট দিনের সরকারি সফরে রোববার নিউ ইয়র্ক পৌঁছার পর এটাই ছিল তার প্রথম কর্মসূচি।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ শিশু তহবিল-ইউনিসেফ প্রধানমন্ত্রীর হাতে ‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ তুলে দেবে।

পরদিন (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ৭৪তম বার্ষিক সাধারণ বিতর্কে বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

জলবায়ু সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পানি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আমরা ৮২ বছরের ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা’সহ অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতার উন্নয়নে ব্যবস্থা নিয়েছি।

“দুর্যোগের সময় জরুরি আশ্রয়ের জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে চার হাজার ২৯১টি ‘সাইক্লোন শেল্টার’ এবং ৫২৩টি ‘বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র’ তৈরি করা হয়েছে। বিপদের মুখে সতর্ক করতে ও জরুরি প্রস্তুতিতে সহায়তার জন্য বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে।”

যুক্তরাজ্য, ফিনল্যান্ড ও ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির তৈরি উচ্চাভিলাষী নতুন যৌথ উদ্যোগ ‘রিস্ক ইনফর্মড আর্লি অ্যাকশন পার্টনারশিপ (আরইএপি) চালু হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, অর্ধশতের বেশি দেশ ও ২০টির বেশি সংস্থাগুলি এই অংশীদারিত্বে যোগ দিচ্ছে। আরইএপির লক্ষ্য মানবিক সহায়তা, উন্নয়ন ও জলবায়ু সম্প্রদায়ের সম্মিলিত উদ্যোগে ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে শতকোটি মানুষকে বিপর্যয় থেকে নিরাপদ রাখা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শক্তিশালী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত পদ্ধতি কীভাবে বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে তা বাংলাদেশ দেখিয়ে দিয়েছে।

“অন্য দেশগুলির সঙ্গে এ অভিজ্ঞতা ভাগাভাগির পাশাপাশি ভবিষ্যতে বিপদের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে অন্যদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার জন্যই আমরা এই উদ্যোগে যোগ দিয়েছি।”