‘পর্যবেক্ষণ’ শেষে অধ্যাপক ফারুকের পক্ষে দাঁড়াল ঢাবি শিক্ষক সমিতি

দুধ নিয়ে গবেষণার ফল নিয়ে সরকারি এক কর্মকর্তার হুমকির মুখে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্স সেন্টারের সদ্য সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বলেছে, তারা শুরু থেকেই এই ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে আসছিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 July 2019, 07:45 PM
Updated : 23 July 2019, 07:45 PM

মঙ্গলবার শিক্ষক সমিতির এক বিবৃতিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের আচরণের নিন্দা জানিয়ে তা 'অনাকাঙ্ক্ষিত ও শিষ্টাচার বহির্ভূত' আখ্যায়িত করেন।

অধ্যাপক ফারুকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি থেকে এই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কোনো বিবৃতি না আসার সমালোচনা করা হচ্ছিল।

সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, “কোনো গবেষণার ফলাফল ভুল অথবা শুদ্ধ, তা পাল্টা গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করতে হয়। মন্ত্রণালয় এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে গবেষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার যে হুমকি দিয়েছে, তা যে কোনো গবেষকের গবেষণার স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ।

“এ ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন গবেষকদের গবেষণায় নিরুৎসাহিত করবে এবং তাতে জাতির প্রভূত ক্ষতি হবে বলে শিক্ষক সমিতি মনে করে। আমাদের বিশ্বাস, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/ব্যক্তিবর্গ এরই মধ্যে তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন।”

অধ্যাপক ফারুক গত ২৫ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাতটি প্যাকেটজাত (পাস্তুরিত) দুধের নমুনা পরীক্ষা করে সেগুলোতে মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহৃত শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়ার কথা জানানোর পর শুরু হয় আলোচনা।

এক পর্যায়ে ফার্মেসি অনুষদভুক্ত চারটি বিভাগের চেয়ারম্যান এই গবেষণার দায়ভার থেকে নিজেদের মুক্ত করতে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি পাঠান।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ওই গবেষণা নিয়েই প্রশ্ন তোলে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন। তাকে পাশে রেখে সংবাদ সম্মেলনে দুগ্ধ ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, এই গবেষণা দেশের দুগ্ধ শিল্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক।

এরপর ঢাকাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসির শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক ফারুকের পক্ষে মানববন্ধন করে আসছিল।

শিক্ষক সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়, এ সংক্রান্ত সব তৎপরতা তারা পর্যবেক্ষণ করে আসছিল।

“গত ১৮ জুলাই শিক্ষক সমিতির কার্যকরি পরিষদের এক সভায় অধ্যাপক আ ব ম ফারুককে হেনস্থা করার এ ধরনের অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা করা হয়।”

অধ্যাপক ফারুকের পাশে দাঁড়ানো বিভিন্ন মহলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে দুধসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্যে ক্ষতিকর উপাদানসমূহ দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করার জন্যও আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহকে আহ্বান জানাই।”