অধ্যাপক ফারুকের পক্ষে ৬৬ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বিবৃতি

দুধ নিয়ে গবেষণার ফল নিয়ে সরকারি এক কর্মকর্তার হুমকির মুখে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্স সেন্টারের সদ্য সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬ জন শিক্ষক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2019, 04:08 PM
Updated : 23 July 2019, 07:42 PM

সোমবার ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’র ৬৬ জন শিক্ষকের পক্ষে গণমাধ্যমে এই বিবৃতি পাঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক।

বিবৃতিদাতা শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গীতি আরা নাসরীন, সামিনা লুৎফা, তাসনীম সিরাজ মাহবুব, মোহাম্মদ মজিবুর রহমান, কাবেরী গায়েন, অর্পিতা শামস মিজান, জাহঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনু মুহাম্মদ, রায়হান রাইন, স্বাধীন সেন, সাহিদ সুমন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শেহরীন আতাউর খান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৌভিক রেজা, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোবাশ্বার হাসান।

অধ্যাপক ফারুক গত ২৫ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাতটি প্যাকেটজাত (পাস্তুরিত) দুধের নমুনা পরীক্ষা করে সেগুলোতে মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহৃত শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়ার কথা জানানোর পর শুরু হয় আলোচনা।

এক পর্যায়ে ফার্মেসি অনুষদভুক্ত চারটি বিভাগের চেয়ারম্যান এই গবেষণার দায়ভার থেকে নিজেদের মুক্ত করতে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি পাঠান।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ওই গবেষণা নিয়েই প্রশ্ন তোলে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন। তাকে পাশে রেখে সংবাদ সম্মেলনে দুগ্ধ ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, এই গবেষণা দেশের দুগ্ধ শিল্পের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক।

রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক-শিক্ষার্থী অধ্যাপক ফারুকের পক্ষে মানববন্ধন করার একদিন পর শিক্ষকদের বিবৃতি এল।

শিক্ষকদের বিবৃতিতে বলা হয়, স্বনামধন্য অধ্যাপক ও গবেষক ফারুকের নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণা কার্যক্রমকে ঘিরে ‘হুমকি-ধমকি এবং অন্যায় চাপে তারা বিপন্ন’ বোধ করছেন।

“অধ্যাপক ফারুকের গবেষণার ফলাফল নিয়ে সন্দেহ থাকলে সরকারি কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আরও গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দুধের মান নিয়ে জনমনে সন্দেহের অবসান ঘটাতে পারতেন। তা না করে অধ্যাপক ফারুককে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে জনপ্রতিনিধি, সরকারি আমলা ও বিভিন্ন কোম্পানির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যে আচরণ করছেন, তা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার পরিবেশের জন্য এক বিরাট হুমকি।

“এই ধরনের আচরণ অব্যাহত থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা গবেষণার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন এবংবিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তচিন্তা ও নতুন জ্ঞান সৃজনের ক্ষেত্রটি আরও সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে।”

স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এক্ষেত্রে অধ্যাপক ফারুককে সুরক্ষা ও সমর্থন না দেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন বিবৃতিদাতা শিক্ষকরা।