বাজেটে শ্রমিকদের জন্য রেশন-আবাসনে বরাদ্দ দাবি

আসন্ন বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের জন্য চাল-ডালসহ অন্যান্য রেশন ও আবাসনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2019, 03:51 PM
Updated : 21 May 2019, 03:51 PM

শ্রমিকদের দুর্দশা লাঘবে বাজেটে পদক্ষেপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘শ্রমিকদের জন্য কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে বাংলাদেশ টেক্সটাইল-গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।

শ্রমিক নেতা মনজুরুল আহসান খান, বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বা সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন।

লিখিত বক্তব্যে শ্রমিক নেতা মাহবুবুর রহমান ইসমাইল বলেন, “বাজেটে শ্রম মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জন্য যা বরাদ্দ দেওয়া হয়, তার ৭৫ ভাগ ব্যয় হয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিষদ বাবদ। সেখান থেকে শ্রমিকের কল্যাণে কোনো অর্থ ব্যয় করা হয় না।

“অথচ পুলিশ কনস্টেবলদের জন্য মাত্র ১১৫ টাকায় ৩০ কেজি চাল, ৩০ কেজি আটা, ১০ কেজি ডাল, ৮ লিটার তেল, ৮ কেজি চিনি ও এক কেজি পোলাও চাল পেয়ে থাকে। অনুৎপাদনশীল খাতের ২০ লাখ শ্রমিক যদি রেশনিং পেতে পারে তাহলে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে উৎপাদনের মূল কারিগর শ্রমিকরা রেশনিং পাওয়ার দাবি রাখে।”

দুই সন্তানসহ একজন শ্রমিকের পরিবার চালাতে বাসা ভাড়াসহ অন্তত ১৬ হাজার তিনশ টাকা প্রয়োজন জানিয়ে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিও জানান তিনি।

শ্রমজীবী মানুষের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালের পাশাপাশি স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়ী বাসস্থান নির্মাণে ঋণ দেওয়ার দাবি ওঠে আলোচনা অনুষ্ঠানে।

বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে বলেন, “গৃহায়ণের জন্য ছয় বছর আগে দুই শতাংশ সুদে ঋণ প্রকল্প চালু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু সেই ঋণের সুবিধা নিয়েছেন মাত্র দুই জন “

শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা দয়া করে সমস্যাগুলো দেশের ভেতরে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে বিদেশে চিঠি লিখবেন না। আগে আমাদেরকে জানান। প্রয়োজনে আমাদের কান ঝালাপালা করেন। বিদেশে চিঠি লিখতে হলে সেটার ভাষা যেন পোশাকের ন্যায্য মূল্য নিয়ে হয়।“

সিপিডির গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন,  “শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দটা বাড়াতে হবে। বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রয়োজন। সরকারি উদ্যোগে স্কুল প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।”

শ্রমিক সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিপিবির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বলেন,  “বাসস্থানের অভাবে শ্রমিকের পরিবারগুলো ভেঙে যাচ্ছে। কিন্তু সরকার তাদের বাসস্থানের জন্য ভাববে না। কারণ শেখ হাসিনা সরকারে ধনিক শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করেন। তাদের স্বার্থের কাছে তিনি বন্দি হয়ে আছেন।”

শ্রমিক নেতা কামরুল ইসলাম, লাভলী ইয়াসমিন, মাহতাব উদ্দিন শহীদ, মনিরুল ইসলামসহ অন্যান্যরা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

দেশে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতায় গার্মেন্টস, নির্মাণ শ্রমিক, লোড-আনলোড শ্রমিক, জাহাজ ভাঙা, স্টিল রি-রোলিং, সিমেন্ট কারখানা শ্রমিক, পাটকল শ্রমিক, ইটভাটা্, নৌযান, সমরাস্ত্র, রাইস মিল, পেপার মিলস, বিদ্যুৎ, চামড়া শিল্প শ্রমিক, খনি শ্রমিক, রেল শ্রমিকসহ ৪২টি শ্রমখাত রয়েছে।