রূপপুরের বালিশ: এখনই জড়াচ্ছে না দুদক

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের নির্মাণাধীন ভবনের আসবাবপত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজে ‘অস্বাভাবিক’ ব্যয়ের অভিযোগ নিয়ে এখনই কোনো তদন্তে নামছে না দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।  

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 May 2019, 11:32 AM
Updated : 21 May 2019, 11:32 AM

কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের ইতোমধ্যে এ বিষয়ে দুটি তদন্ত কমিটি করছে। মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দেখে তারপরই দুদক এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।   

মঙ্গলবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন ইকবাল মাহমুদ।

তিনি বলেন, “উই অ্যার ওয়েটিং ফর দ্যা রিপোর্ট। যেহেতু মিনিস্ট্রি কাজ করছে, আমরা রিপোর্ট চাইব, আমরা রিপোর্ট দেখব, তারপরে যদি দেখি ইনগ্রেডিয়েন্টস আছে, সেখানে ডেফিনেটলি আমরা আইনি পদক্ষেপ নেব।”

এ সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে ইকবাল মাহমুদ বলেন, “কথা হল দুর্নীতি হয়েছে বা হয়নি। গণমাধ্যমের যে তথ্য সেখানে আমি দেখেছি- বালিশ, কেটলি এসব বিষয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের কিছু প্রসিডিউর আছে। একটা রিপোর্ট পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তো জাম্প দিতে পারি না। সেটা দেখতে হয়, বুঝতে হয়।

“আমরা ইতোমধ্যে কথা বলেছি, জেনেছি যে অলরেডি দুটি কমিটি কাজ করছে। পত্রিকায় যে নিউজ সেটিও আমাদের কাছে এসেছে। এসব দেখে আমি একটা অর্ডার করেছি। অর্ডারটি হল- সেই তদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা। সবাই যদি একই জিনিস নিয়ে কাজ করতে থাকি, তাহলে জিনিসটা ভাল দেখায় না। তারা কী রিপোর্ট দেয়, সেই রিপোর্ট দেখে তখন ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের নির্মাণাধীন ভবনের আসবাবপত্রে ‘অস্বাভাবিক’ ব্যয়ের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দেখে গত রোববার মন্ত্রণালয় দুটি তদন্ত কমিটি করে।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় বলা হয়, “গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মাণাধীন ৬টি ভবনে আসবাবপত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজের জন্য দাপ্তরিক প্রাক্কলন প্রণয়নপূর্বক ৬টি প্যাকেজে ই-জিপিতে দরপত্র আহবান করা হয়। প্যাকেজসমূহের প্রতিটির ক্রয়মুল্য ৩০ কোটি টাকার নিম্নে প্রাক্কলন করায় গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। এক্ষেত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলন প্রণয়ন, অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগে মন্ত্রণালয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

“এ বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় হতে একজন অতিরিক্ত সচিব এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর হতে একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের পাওনা পরিশোধ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানায় মন্ত্রণালয়।

অতীতে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরকারের অন্যান্য বিভাগের পাশাপাশি দুদক অনুসন্ধানের উদ্যোগ নিলেও এবার তা কেন হবে না- সেই প্রশ্ন একজন সাংবাদিক রেখেছিলেন ইকবাল মাহমুদের সামনে।

উত্তরে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “শোনেন, আমাদের কতগুলো প্রজেক্ট আছে যেগুলো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে হঠাৎ করে আপনি জাম্প করবেন? সেখানে চিন্তা-ভাবনা করতে হয়।

“এটা জাতীয় বিষয়, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প বহুদিন ধরে চলছে। কিন্তু এটার বাস্তবায়নের কাজ মাত্র শুরু হয়েছে। এটা আমাদের জন্য অত্যান্ত গর্বের ও গুরুত্বপূর্ণ। সো জাস্ট ওয়েট। টেলিভিশনে দেখলাম একজন মন্ত্রী বলছেন যে, বেতন-ভাতা এগুলো সঠিক নয়। বালিশের ক্ষেত্রে এ রকম একটা পরিস্থিতি তো হতেও পারে।”