প্রস্তুত আশ্রয়কেন্দ্র, নির্দেশের অপেক্ষায় স্বেচ্ছাসেবকরা

ঘূর্ণিঝড় ফণী ভারতের ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানার পর বাংলাদেশে আসতে পারে ধরে নিয়ে দেশের সাড়ে তিন হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2019, 12:01 PM
Updated : 8 Nov 2019, 02:00 PM

নির্দেশনা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবকরা এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া শুরু করবে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি) উৎপল কুমার দাস জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দেশের ১৯ উপকূলীয় জেলায় ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজন হলে নির্দেশনার সঙ্গে সঙ্গে তারা উপকূলীয় নিচু এলাকার মানুষদের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাবে।

তবে এখনও উপকূলবর্তী বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আশ্রয়কেন্দ্রে আনার প্রয়োজন হলে সব কিছুই প্রস্তুত আছে। জেলা প্রশাসক এবং ইউএনওদের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। ১৯টি উপকূলীয় জেলায় অ্যালার্ট দেওয়া হয়েছে।”

ঘূর্ণিঝড় ফণী বাংলাদেশ উপকূলের ৭০০ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে যাওয়ায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলা এবং সংলগ্ন দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

আর চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং নিকটবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ থাকবে নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায়।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস ঠিক থাকলে ভারতের ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করে শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে পৌঁছাতে পারে ফণী। তবে ঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলে দেখা দিতে পারে সকাল থেকেই।

ঘূর্ণঝড় ফণি আঘাত হানতে পারে ধরে নিয়ে উপকূলীয় এলাকার প্রায় সব ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি) মো. মোহসীন।

মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, উপকূলীয় ১৯ জেলায় সব মিলিয়ে মোট তিন হাজার ৮৬৮টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে।

এসব আশ্রয়কেন্দ্রে কত মানুষকে আশ্রয় দেওয়া যাবে সেই ধারণা দিতে না পারলেও ওই কর্মকর্তা বলেন, “এসব আশ্রয়কেন্দ্র যথেষ্ট, তবে আরও কিছু আশ্রয়কেন্দ্রে থাকলে ভালো হত।”

উপকূলীয় জেলাগুলোতে শুকনা খাবার, ওষুধ, পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত সচিব উৎপল জানান, যেসব জেলা আক্রান্ত হতে পারে সেসব জেলায় নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়কে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডাকা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানিয়েছেন উপকূলীয় জেলাগুলোতে মাইকিং করে জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসকদের দুইশ মেট্রিক টন চাল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি প্রত্যেক ডিসিকে পাঁচ লাখ করে টাকা দেওয়া আছে।