ঢাবি ছাত্রদের পিটিয়ে দুই পুলিশ বরখাস্ত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার পর শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে শাহবাগ থানার দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।  

তারেক হাসান নির্ঝরবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2019, 07:58 PM
Updated : 2 March 2019, 08:13 PM

শনিবার রাত ১০টার দিকে ক্যাম্পাসের দোয়েল চত্বর এলাকায় এক পুলিশ কনস্টেবল ‘বন্দুকের বাট’ দিয়ে তাদের আঘাত করেন এবং অপর একজন সেই ঘটনার ভিডিও করছিলেন বলে আহত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

এ ঘটনায় সাইফুল্লাহ ও মামুন নামের ওই দুই কনস্টেবলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা আমরা পেয়েছি। তার প্রেক্ষিতে এই দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পুলিশ সদস্যের মারধরে আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জুয়েল রানা, গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের কামরুল হাসান ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে খাজা ইরফানুল হক। তারা সবাই শহীদুল্লাহ হলের আবাসিক ছাত্র।

সহপাঠীদের পেটানোর খবর শুনে মধ্যরাতে রাস্তায় নেমে আছেন শহীদুল্লাহ হলের ছাত্ররা

আহত জুয়েলের গাল দিয়ে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। ডান হাতেও প্রচণ্ড ব্যথা তার। চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

ঘটনার বর্ণনায় জুয়েল রানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি নীলক্ষেত থেকে বই কিনে দোয়েল চত্বর হয়ে হলে যাচ্ছিলাম। সেখানে এক ফুচকার দোকানের আবর্জনা রাস্তায় ফেলছিল বলে আমি প্রতিবাদ জানাই। এরপর ফুচকাওয়ালার সাথে এ নিয়ে আমার কথা কাটাকাটি হয়।

সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

“এই কনস্টেবল ওই দোকান থেকে চাঁদা নিচ্ছিলেন। তখন তিনি এসে আমাকে ধাক্কা দেন। এরপর আমার আরও তিন বন্ধু এসে প্রতিবাদ জানালে তিনি আমাদের বন্দুকের বাট দিয়ে পেটাতে থাকেন। পাশে দাঁড়ানো মামুন নামে এক কনস্টেবল ভিডিও করছিল। কয়েকজন পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখছিল। আমরা সবার কাছে হেল্প চাচ্ছিলাম। কেউই এই কনস্টেবলকে নিবৃত করেনি।”

এ খবর শহীদুল্লাহ হলে জানাজানি হলে কয়েকশ শিক্ষার্থী দোয়েল চত্বরে এসে অবস্থান নেন। সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন তারা। পরে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীসহ সংগঠনটির নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।

ছাত্রলীগ নেতারা গিয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন

উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা মারধরকারী পুলিশ সদস্যকে দোয়েল চত্বরে এনে ‘ক্ষমা চাওয়ানোর’ দাবি জানায়। তাদের বুঝিয়ে ছাত্রলীগ নেতারা আহত তিন শিক্ষার্থীকে নিয়ে শাহবাগ থানায় আসেন।

রাত ১টার দিকে শাহবাগ থানায় আহত তিন শিক্ষার্থীসহ ছাত্রলীগ নেতাদের সামনে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ওই দুই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান ওসি আবুল হাসান।